ফুল দিয়ে রূপচর্চা
আগেকার দিনে স্নানের জলে গোলাপের পাপড়ি মিশিয়ে স্নান করার রেওয়াজ ছিল। চুলের তেলেও মেশানো হতো জবার রস। খেয়াল করলে দেখবেন, আজকাল আমরা যেসব ক্রিম লোশন ব্যবহার করি, তার বেশিরভাগের মধ্যেই থাকে ফুলের উপাদান। ক্ষতিকর কেমিকেল এর বদলে, ত্বক ও চুলের পরিচর্যায় মরশুমী ফুলের ব্যবহার করলে উপকার পাবেন অনেক বেশি। কোন সমস্যায় কোন ফুল কীভাবে ব্যবহার করবেন রইলো তার হদিশ।
কথায় আছে, যে মরশুমের ত্বক আর চুলের যেসব সমস্যা তার সমাধান থাকে মরশুমী ফুল আর ফলে। মন ভাল রাখতে যেমন ফুলের জুড়ি মেলা ভার তেমনই ফুলের সুগন্ধ স্নায়ু শিথিল রাখে। কিছু ফুলের মধ্যে থাকে প্রয়োজনীয় এসেন্সিয়াল অয়েল, যা ত্বককে ভিতর থেকে রাখে সুন্দর, প্রানবন্ত। এছাড়াও ফুলের মধ্যে থাকে প্রয়োজনীয় কিছু নিউট্রিয়েন্টস যা এজিং প্রক্রিয়াকে ধীর করে দেয়। আর তাই ফুলের ফেশিয়াল ত্বকের জন্য খুব উপকারী। তবে যাদের ত্বক স্পর্শকাতর, অ্যালার্জিপ্রবণ তারা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া ব্যবহার করবেন না। চলুন জেনে নিই, প্রকৃতির এই সুন্দর উপহার দিয়ে কীভাবে করবেন বসন্তের রূপটান।
গাঁদা
•১ টেবিল চামচ গাঁদা ফুল বাটা+ ১ চা চামচ দুধ+ ১/২ চা চামচ মধু মিশিয়ে মুখে মাখুন। ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে নিন। ত্বক উজ্জ্বল হবে।
•শুকনো গাঁদা ফুলের পাপড়ি ১/২ কাপ+ নারকেল তেল ১ কাপ ডবল বয়লারে ৫-৬ মিনিট জ্বাল দিয়ে ঠান্ডা করে ছেঁকে নিন। ওতে গোলাপ জল আর গ্লিসারিন মিশিয়ে কাঁচের জারে করে ফ্রিজে রাখুন। রাতে শুতে যাওয়ার আগে হাতে পায়ে মাখুন, ত্বক কোমল হবে।
•গাঁদা ফুলের পাপড়ির সঙ্গে মেথি আর মৌরী ভিজিয়ে রাখুন সারারাত। পরদিন বেটে মাথা মাখুন। ৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে নিন। খুশকির সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
গোলাপ
•১ টেবিল চামচ গোলাপ ফুল বাটা+১/২ চা চামচ মধু মিশিয়ে মুখে, গলায় মাখুন। রোদে পোড়া ভাব দূর হবে।
•১/২ চা চামচ গোলাপ বাটা+ ১/২ চা চামচ গ্লিসারিন+ ১/২ চা চামচ মধু মিশিয়ে ঠোঁটে লাগালে কালোভাব দূর হবে।
•শুতে যাওয়ার আগে স্নানের জলে গোলাপের পাপড়ি মিশিয়ে স্নান করলে রাতে ভালো ঘুম হবে।
রজনীগন্ধা
•১ টেবিল চামচ রজনীগন্ধা পাপড়ি বাটা+ ১/২ চা চামচ দুধ+ ১/২ চা চামচ মধু+ ১/২ চা চামচ বেসন মিশিয়ে মুখে, গলায়, হাতে মেখে ৩০ মিনিট রেখে স্নান করে নিন। রং উজ্জ্বল হবে।
ডালিয়া
•হলুদ ডালিয়ার পাপড়ি বাটা ১ টেবিল চামচ+ ১/২ চা চামচ সয়াবিন গুঁড়ো মিশিয়ে সারা গায়ে মেখে কিছুক্ষণ রেখে ঘসে ঘসে ধুয়ে ফেলুন। স্ক্রাবারের কাজ করবে।
জবা
•৬ টি জবাফুল+ অ্যালোভেরা পাল্প ২ টেবিল চামচ+ ১/২ কাপ টকদই+ ১ টা ডিম একসাথে বেটে মাথায় মাখুন। ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ১ দিন করলে চুল ওঠা কমবে।
•১ টেবিল চামচ জবা ফুলের পাপড়ি বাটা+ ১ চা চামচ মুলতানি মাটি+ ১ চা চামচ টকদই মিশিয়ে মুখে মাখুন। ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে নিন। দাগ ছোঁপ দূর হবে।
জুঁই
•জুঁই ফুল বাটা ১ চা চামচ+ ১ চা চামচ কাঁচা দুধ+ বেসন মিশিয়ে হাতে মাখুন। ট্যান রিমুভ হবে।
পদ্ম
•১০-১২ টি পদ্মের পাপড়ি+ ২-৩ চা চামচ কাঁচা দুধ+ ১ চা চামচ শ্বেত চন্দন বাটা মিশিয়ে মুখে মাখুন। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন। বলিরেখা কমবে।
•পদ্মের পাপড়ি বাটা ১ টেবিল চামচ+ কাঁচা হলুদ বাটা ১/২ চা চামচ+ ১ চা চামচ কাঁচা দুধ মিশিয়ে মুখে মাখলে ব্রনের সমস্যা কমবে।
নয়নতারা
•সামান্য গরম জলে নয়নতারার পাপড়ি দিয়ে ঢেকে রাখুন। ঠাণ্ডা হলে ছেঁকে নিন। ওতে মধু, টকদই আর ওটসের গুঁড়ো মেশান। মুখ সহ সারাগায়ে মাখুন। ত্বক প্রানবন্ত হবে।
বসন্তের রান্না...
বসন্তের নানারকম রোগব্যাধি থেকে বাঁচতে রোজকার রান্নায় সব সবজি রাখবেন তাই নিয়ে এবারের সংকলন।
পুষ্টিবিদদের মতে, সজনেতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, আয়রন, ক্যলসিয়াম ও পটাশিয়াম রয়েছে। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টেও ভরপুর এই সবজি। তাই ঋতু পরিবর্তনের সময়ে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে এর বিশেষ ভূমিকা থাকে। সজনের মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট থাকায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যেমন বাড়ায়, তেমনই আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় হওয়া ভাইরাসজনিত অসুখকে দূরে রাখে। শীতের পরই চলে আসে বসন্ত। এই সময় নানা রকম অসুখ বিসুখের প্রকোপ বেড়ে যায়। ঠিক তেমনি বসন্তের বাতাসের সঙ্গে ভেসে বেড়ায় নানান রকমের অসুখ। আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় সক্রিয় হয়ে ওঠে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া। সজনে ফুল বা ডাঁটায় এতে প্রচুর ফসফরাস থাকায় হাড়ের জোর বাড়াতে সাহায্য করে সজনে। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে ও রক্তাল্পতা কমাতে সজনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। হার্টের অসুখ দূরে ঠেকাতেও এই সব্জি কার্যকর। জলবসন্ত রোগ ঠেকাতে সজনে খুবই কার্যকর। সজনে ডাঁটা, সজনে শাকের সঙ্গে সজনে ফুলও বাঙালির প্রিয়। সজনের আয়ুর্বেদিক গুণও রয়েছে। সজনে ডাঁটা থেকে শুরু করে সজনে ফুলের বড়া সবই বাঙালির আয়ত্তে। এছাড়াও রয়েছে গাদাল পাতা। পেটের সমস্যা, হজমের গোলমাল এর জন্য গাদাল পাতা ভীষণ উপকারী। নিমপাতা, সজনেপাতা বা সর্ষে ফুল কেও অবহেলা করলে চলবেনা। আমাদের আশেপাশে থাকা খুব সাধারণ কিছু উপকরণে জিভে জল আনা কী কী অসাধারণ সব রান্না করতে পারেন চলুন দেখে নিই..
সঞ্চারি কর্মকার
গেঁদাল পাতা দিয়ে শুক্তানি
কী কী লাগবে
লাউ অর্ধেক, গেঁদাল পাতা ১০-১২ টি, নুন পরিমান মত, হলুদ ১ চিমটি, রাঁধুনি দেড় চা চামচ, আদা ১/২ ইঞ্চির টুকরো, তেজপাতা ১ টি, চিনি ১ চা চামচ, তরল দুধ ১/৪ কাপ, সর্ষের তেল ২ চামচ, মটর বা বিউলির ডালের বড়ি ৭-৮ টি।
কীভাবে বানাবেন
লাউ একটু মোটা মোটা করে কুচিয়ে নিয়ে, গরম জলে অল্প নুন সহ সেদ্ধ করে কিছুটা নরম করে নিতে হবে, যাতে লাউ আস্তই থাকবে কিন্তু একদম গলে যাবে না। এরপর জল ঝরিয়ে রাখুন। গেঁদাল পাতাগুলো ফুটন্ত গরম জলে ৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। রাঁধুনি ফোড়নের জন্য অল্প রেখে বাকিটা আদার সাথে মিহি করে পেস্ট করে নিন। এরপর কড়াইয়ে তেল গরম করে বড়ি ভেজে তুলে নিন। ফোড়নে রাঁধুনি ও তেজপাতা দিন, সুন্দর ঘ্রান আসলে সেদ্ধ করে নরম করা কুচানো লাউ দিয়ে নাড়াচাড়া করে নুন ও হলুদ দিন, ভালো মতন মিশিয়ে ঢাকা দিয়ে মিনিট ৪ রান্না করুন। লাউ ভালো করে মজে আসলে রাঁধুনী আদা বাটা দিয়ে হাল্কা নেড়ে চেড়ে চিনি মিশিয়ে দিন এরপর ১/২ কাপ দুধে অল্প জল মিশিয়ে পাতলা করে ঢেলে মিশিয়ে দিন। এবারে ভাজা মটরডাল বা বিউলির ডালের বড়ি আর গেঁদাল পাতা দিয়ে ঢেকে আরও ৩ মিনিট রান্না করে নিন। খুব বেশি পাতলা নয় একটু গা মাখা ভাবের হলেই নামিয়ে নিন গেঁদাল পাতা লাউয়ের শুক্তানি।
ঝিঙ্গা দিয়ে মুগডাল
কী কী লাগবে
মুগডাল ২০০ গ্রাম, ফোড়নের জন্য (তেজপাতা, শুকনো লঙ্কা, সাদা জিরে, আদা বাটা), কাঁচা লঙ্কা ২টি, নুন চিনি স্বাদমতো, হলুদ গুঁড়ো ১/২ চা চামচ, ঝিঙ্গা ২ টি, সরষের তেল ২ চা চামচ।
কীভাবে বানাবেন
মুগডাল ভেজে ধুয়ে সেদ্ধ করে নিন। ওর মধ্যে জল, নুন, হলুদ গুঁড়ো, চিনি, টুকরো করা ঝিঙ্গা আর কাঁচালঙ্কা দিয়ে ফুটতে দিন। তেল গরম করে ফোড়নের সব উপকরণ নেড়ে ওর মধ্যে ডাল ঢেলে ২-৩ মিনিট ফুটিয়ে নামিয়ে নিন।
দেবযানী গুহ বিশ্বাস
উচ্ছের চাপড় ঘন্ট
কী কী লাগবে
এক কাপ উচ্ছে(গোল করে কাটা), ১ কাপ ভেজানো মটর ডাল, ২ টো কাঁচা লঙ্কা, ১/২ চা চামচ পাঁচ ফোড়ন, ২ টো তেজপাতা, ২ চা চামচ আদা বাটা, ১/২ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো, ১চা চামচ জিরে গুঁড়ো, ১/২ চা চামচ রাঁধুনি বাটা, সামান্য চিনি, লবণ স্বাদমতো, ২ টেবিল চামচ দুধ, সর্ষের তেল ৫ টেবিল চামচ , ঘি ১ চা চামচ এবং জল প্রয়োজন মতো।
কীভাবে বানাবেন
প্রথমে কড়াই গরম করে তাতে ২ টেবিল চামচ সর্ষের তেল দিয়ে উচ্ছে গুলো ভেজে তুলে নিতে হবে। এবার ভেজানো মটর ডাল আর কাঁচা লঙ্কা একসাথে বেটে নিতে হবে। ডাল বাটা হয়ে গেলে তাতে সামান্য লবণ মিশিয়ে নিয়ে, একটা তাওয়া গরম করে তাতে ১ টেবিল চামচ সর্ষের তেল দিয়ে চ্যাপ্টা করে ছোট ছোট ডালের বড়া বখ চাপড় গুলো ভেজে নিতে হবে। কড়াইয়ে আবার তেল দিয়ে গরম করে নিয়ে, পাঁচ ফোড়ন ও তেজপাতা ফোড়ন দিয়ে আদাবাটা, হলুদ গুঁড়ো, লবণ, জিরে গুঁড়ো ও সামান্য জল দিয়ে মশলা কষিয়ে নিতে হবে। রাঁধুনি বাটা দিয়ে আবারও কিছুক্ষণ নেড়েচেড়ে নিয়ে ভেজে রাখা উচ্ছে ও ডালের বড়া গুলো দিয়ে দিতে হবে। মশলার সাথে মিশিয়ে নিয়ে জল দিয়ে কিছুক্ষণ ঢেকে রান্না করে নিতে হবে। ৫ থেকে ৭ মিনিট পর ঢাকনা খুলে চিনি দিয়ে আবারও নেড়েচেড়ে, ডালের বড়া গুলো একটু ভেঙে দিতে হবে তাতে মাখা মাখা হবে। সবশেষে নামানোর আগে দুধ ও ঘি দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে নামিয়ে নিতে হবে। এবার গরম গরম ভাতের সাথে পরিবেশন করুন উচ্ছের চাপড় ঘন্ট।
নারকোলি উচ্ছে
কী কী লাগবে
২ টো উচ্ছে গোল গোল করে কাটা, ২ টেবিল চামচ নারকেল বাটা, ১ চা চামচ আদা বাটা, ২ চা চামচ কাঁচা লঙ্কা বাটা, ১ চা চামচ জিরে গুঁড়ো, ১/২ চা চামচ গোটা সর্ষে, ১ টা শুকনো লঙ্কা, ১ টা তেজপাতা, লবণ স্বাদমতো, ১/২ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো, সামান্য চিনি, ১ চা চামচ নারকেল কোরা ও চেরা কাঁচালঙ্কা সাজানোর জন্য, ২ টেবিল চামচ সর্ষের তেল, ১ চা চামচ ঘি এবং প্রয়োজনমতো জল।
কীভাবে বানাবেন
প্রথমে একটা কড়াই গরম করে তাতে সর্ষের তেল দিয়ে তেজপাতা, শুকনো লঙ্কা ও গোটা সর্ষে ফোড়ন দিয়ে কেটে রাখা উচ্ছে গুলো দিয়ে দিতে হবে। সামান্য লবণ দিয়ে কিছুক্ষণ ভেজে নিতে হবে। এবার উচ্ছে গুলো কড়াইয়ের একপাশে সরিয়ে ফাঁকা জায়গায় ঘি দিয়ে আদা বাটা, কাঁচা লঙ্কা বাটা, হলুদ গুঁড়ো ও জিরে গুঁড়ো দিয়ে দিতে হবে। এরপর উচ্ছের সাথে পুরো মশলাটা মিশিয়ে নিতে হবে। কিছুক্ষণ রান্না করে, নারকেল বাটা দিয়ে দিয়ে ভালো করে কষিয়ে নিয়ে, সামান্য চিনি আর জল দিয়ে ঢেকে রান্না করতে হবে। মাখা মাখা হয়ে এলে নারকেল কোরা ও চেরা কাঁচালঙ্কা ছড়িয়ে নামিয়ে নিলেই তৈরি নারকোলি উচ্ছে। চাইলে সামান্য ঘি দিতে পারেন স্বাদ আরও ভালো হবে।
ছন্দা গুহ
সজনে ফুলের বড়া
কী কী লাগবে
১ বাটি সজনে ফুল, ৩ টেবিল চামচ বেসন, দেড় টেবিল চামচ চালের গুঁড়ো, ১ টেবিল চামচ সাদা তিল, ১/২ টেবিল চামচ পোস্ত,
নুন স্বাদমতো, চিনি স্বাদমতো, হলুদ পরিমাণ মতো, লঙ্কাগুড়ো পরিমাণ মতো, কাঁচালঙ্কা কুচি, কালোজিরা, সরষের তেল ভাজার জন্য
কীভাবে বানাবেন
প্রথমে সজনে ফুল ভালো করে বেছে ধুয়ে জল ঝরিয়ে নিতে হবে। তারপর সরষের তেল বাদে উপরোক্ত সমস্ত উপকরণ দিয়ে হালকা হাতে জল ছাড়া মেখে দশ মিনিট ঢেকে রাখতে হবে। জল ছাড়াই সুন্দর নরম হয়ে যাবে, নুন দিয়ে ফুলগুলোকে মেখে রাখার জন্য।
এরপর ফ্রাইংপ্যানে সরষের তেল গরম করে মেখে রাখা বড়ার উপকরণ আবার একটু মেখে নিয়ে গ্যাসের লো ফ্লেমে ধীরে ধীরে ভেজে নামাতে হবে, তারপর গরম ভাতে নুন কাঁচালঙ্কা সহযোগে মুচমুচে সজনে ফুলের বড়া ভীষণ ই সুস্বাদু এবং উপকারী।
মটর ডালের বড়া দিয়ে দুধ শুক্তো
কী কী লাগবে
উচ্ছে ১০০ গ্রাম, কাঁচকলা ১ টি, আলু ১ টি, বেগুন অর্ধেক, রাঙা আলু ১ টি, সিম ২ টি, সজনে ডাঁটা ২ টি, পেঁপে ১ টি, হিং এক চিমটি, পাঁচফোড়ন ১ টেবিল চামচ, তেজপাতা ১টি, সরষে বাটা ১ চা চামচ, কাসুন্দি ১ চা চামচ, নুন স্বাদ মতো, চিনি ১ টেবিল চামচ, দুধ ২ কাপ, সরষের তেল আধ কাপ, ঘি ২ টেবিল চামচ, মটরডাল বাটা ১ কাপ
কীভাবে বানাবেন
কড়াইয়ে তেল গরম করে ডালবাটা দিয়ে ছোট ছোট বড়া ভেজে তুলে নিন। ওই তেলেই উচ্ছে ভাজুন। আরও একটু তেল দিয়ে হিং, পাঁচফোড়ন আর তেজপাতা ফোড়ন দিন। তার পর একে একে কাঁচকলা, বেগুন, রাঙা আলু, সিম, পেঁপে, সজনে ডাঁটার টুকরো দিয়ে নেড়েচেড়ে দুধ ঢেলে চাপা দিন। একটি বাটিতে সরষে বাটা, কাসুন্দি এবং শুকনো খোলায় ভেজে ও গুঁড়িয়ে রাখা পাঁচফোড়ন একসঙ্গে মিশিয়ে রাখুন। দুধে সমস্ত আনাজ সিদ্ধ হয়ে গেলে উচ্ছে ভাজা, মশলার মিশ্রণ, নুন ও চিনি দিয়ে ফুটতে দিন। সামান্য ঘন হয়ে এলে ঘি আর নারকেল কোরা ছড়িয়ে নামিয়ে নিন।
সোমঋতা দে
ঘটিবাড়ির দুধ শুক্তো
কী কী লাগবে
আলু, উচ্ছে ,সজনে ডাটা, বড়ি, রাঙা আলু, পেঁপে, বরবটি, বেগুন, কাঁচকলা, পটল,
ফোড়নের জন্য (মৌরি, সর্ষে, রাঁধুনি, তেজপাতা), দুধ, ঘি, (আদা, মৌরি, সাদা সর্ষে, রাঁধুনি) একসঙ্গে বাটা।
কীভাবে বানাবেন
তেলে সামান্য ঘি দিয়ে গরম করে একে একে বড়ি, উচ্ছে, বেগুন, আলু, বরবটি, কাঁচকলা, পটল, রাঙা আলু ভেজে তুলে রাখতে হবে। এরপর আরও খানিকটা তেল দিয়ে ফোড়নের জন্য তেজপাতা, মৌরি, রাঁধুনি, সর্ষে দিয়ে তাতে আগে থেকে কেটে রাখা সজনেডাটা দিয়ে অল্প নেড়েচেড়ে নিন। হালকা ভাজা হলে তাতে ভেজে রাখা বাকি সবজি দিতে হবে (বেগুন, উচ্ছে বড়ি বাদে)। এরপরে আগে থেকে বেটে রাখা আদা, রাঁধুনি, সাদা সর্ষে, নুন, এবং পরিমাণ মতো চিনি দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হয়ে গেলে বেশ খানিকটা দুধ গরম করে মিশিয়ে দিতে হবে। তাতে আগে থেকে ভেজে রাখা বেগুন, উচ্ছে, বড়ি দিয়ে ঢাকা দিয়ে দিন। সমস্ত সবজি সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প দুধে এক চামচ ময়দা গুলে সেটা ধীরে ধীরে মেশান। ঝোল ঘন হয়ে গেলে শেষে ঘি দিয়ে নামিয়ে পরিবেশন করুন।
লাউ শুক্তো
কী কী লাগবে
লাউ, উচ্ছে, দুধ, ফোড়নের জন্য (রাঁধুনি, মৌরি, তেজপাতা), মটর ডাল, নুন চিনি স্বাদমতো, সরষের তেল, ঘি, মৌরি+ আদা বাটা, দুধ, মৌরি গুঁড়ো
কীভাবে বানাবেন
বড়ার জন্য মটরডাল বেটে ভালো করে ফেটিয়ে ছোটো ছোটো বড়ার আকারে ভেজে তুলে নিতে হবে। এরপর তেলে অল্প ঘি দিয়ে গরম করে তাতে কেটে রাখা উচ্ছে দিয়ে লাল করে ভেজে তুলে নিতে হবে। ওই তেলে রাঁধুনি, মৌরি, তেজপাতা ফোড়ন দিয়ে কেটে রাখা লাউ দিয়ে দিতে হবে। লাউ থেকে জল ছাড়তে শুরু করলে তাতে পরিমাণ মতো নুন, চিনি আর অল্প পরিমাণে মৌরি বাটা আর আদা বাটা দিয়ে ঢাকা দিয়ে লাউ সেদ্ধ হতে দিন। এবার পরিমাণমতো গরম দুধ মিশিয়ে, ফুটে এলে ভেজে রাখা উচ্ছে আর ডালের বড়া দিয়ে ঢেকে খানিকক্ষণ রান্না করতে হবে। সব শেষে ঘি আর একটু মৌরি গুড়ো দিয়ে নামিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।
সুস্মিতা চক্রবর্তী
শুক্তো
কী কী লাগবে
২-৩ টি উচ্ছে, ২ টি সজনে ডাঁটা, ২ টি মিষ্টি আলু, ১ টি কাঁচা কলা,১ টি বেগুন, অর্ধেক কাঁচা পেঁপে, ১ কাপ অথবা এক মুঠো বড়ি (বিউলির ডালের), ১ টেবিল চামচ গোটা সর্ষে, ১ চা চামচ পোস্ত, ১/২ চা চামচ রাঁধুনী, ১ টি গোটা লাল লঙ্কা, ১/২ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো, স্বাদ অনুযায়ী নুন ও চিনি, ৪ টেবিল চামচ তেল, দেড় কাপ জল
কীভাবে বানাবেন
সব সবজি গুলো ডুমো করে কেটে নিন।সর্ষে পোস্ত বেটে আলাদা করে রাখুন। পাত্রে তেল গরম করে তাতে বড়ি ভেজে নিয়ে আলাদা করে রেখে দিন। এবার কড়াইতে তেল দিয়ে উচ্ছে ও বেগুন ভেজে নিয়ে আলাদা করে রাখুন। শুকনো লঙ্কার সাথে রাঁধুনি ও সামান্য গোটা সরষে দিয়ে বাকি সব সবজি গুলো ভেজে নিন। হলুদ গুঁড়ো, নুন দিয়ে ভালো করে ভেজে পরিমাণ মতো জল দিয়ে ঢেকে ঢিমে আঁচে রান্না করুন। এই সময় উচ্ছে এবং ভাজা বড়িগুলো দিয়ে দিন। সবজি গুলো সেদ্ধ হয়ে এলে তাতে সরষে পোস্ত বাটা ও একটু চিনি দিয়ে ভালো করে নেড়েচেড়ে মিশিয়ে নিতে হবে। এবার আগুন থেকে নামিয়ে গরম গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন।
সর্ষে ফুলের বড়া
কী কী লাগবে
১ কাপ সর্ষে ফুল ছাড়িয়ে নেওয়া, ১/৪ আঁটি ধনেপাতা কুচি, ১/৪ কাপ নারকেল কোরা, ২-৩ টি কাঁচা মরিচ কুচি, ২ টেবিল চামচ আতপচাল বাটা, ১ চা চামচ বেসন, স্বাদ মত নুন ও চিনি, পরিমাণ মত তেল ভাজার জন্য।
কীভাবে বানাবেন
একটি পাত্রে সর্ষে ফুল নিয়ে তার মধ্যে নুন, চিনি, কাঁচা মরিচ কুচি, নারকেল কোরা, ধনে পাতা কুচি, দিয়ে ভালো করে চটকে মেখে নিতে হবে। এবারে চাল বাটা ও বেসন দিয়ে মিশিয়ে নিতে হবে। জল দেওয়ার দরকার নেই, তবে বেশি শুকনো মনে হলে খুব সামান্য জল দিয়ে মাখা যাবে। এবার ঐ মিশ্রণ থেকে ছোট ছোট বল বানিয়ে নিতে হবে। তেল গরম করে তাতে বড়া গুলো ভেজে তুলে নিন এবং পরিবেশন করুন গরম ভাতের সঙ্গে।
কাকলি দাস
নিমপাতার বড়া
কী কী লাগবে
এক আঁটি কচি নিমপাতা, বেসন ২ টেবিল চামচ, চালের গুঁড়ো ২ টেবিল চামচ, নুন স্বাদ মতো, হলুদ গুঁড়ো ১/২ চা চামচ, কালোজিরা ১/২ চা চামচ, ভাজার জন্য সাদা তেল।
কীভাবে বানাবেন
নিমপাতা কুচিয়ে ওর মধ্যে বেসন, চালের গুঁড়ো, নুন, হলুদ গুঁড়ো, কালোজিরা একসাথে মেখে অল্প অল্প জল দিয়ে মেখে নিন। তেল গরম করে বড়া গুলো ভেজে তুলে নিলেই তৈরী।
সজনে পাতার বড়া
কী কী লাগবে
সজনে পাতা কুচি ১ কাপ, বেসন ৪ টেবিল চামচ, নুন স্বাদ মতো, হলুদ গুঁড়ো ১/২ চা চামচ, লঙ্কা গুঁড়ো ১/২ চা চামচ, খাবার সোডা ১/৪ চা চামচ, জন্য সাদা তেল পরিমাণমতো।
কীভাবে বানাবেন
তেল ছাড়া বাকি সব উপকরণ একসঙ্গে মেখে রাখুন কিছুক্ষণ। তেল গরম করে অল্প অল্প মিশ্রন দিয়ে বড়ার মতো ভেজে তুলে নিন। ঘি ভাতের সঙ্গে ভালো লাগবে।
Comments