বসন্তের হাওয়া একটু অন্যরকম। মনকেমন করা। গাছের কচি পাতা আর লাল হলুদ ফুলে সেজে ওঠে চারিদিক। যেন প্রকৃতিও তার চারিপাশ ঢেলে সাজায় মনের মতো করে। চারিদিক যেন রঙিন হয়ে ওঠে এই সময়ে। সে জন্যেই বসন্তকে বলা হয় ঋতুরাজ। আর এই ঋতুর বিশেষ উৎসব দোল।

বাঙালির রঙের উৎসব দোল পূর্ণিমা। মহাপ্রভু শ্রী চৈতন্যের জন্ম হয়েছিল এই পূর্ণিমার তিথিতে, তাই দোল পূর্ণিমাকে গৌরী পূর্ণিমা বলা হয়। দোল পূর্ণিমা অনেক পৌরাণিক ঘটনা। এই তিথিতে বৃন্দাবনে আবির ও গুলাল নিয়ে শ্রী কৃষ্ণ, রাঁধা এবং তার গোপীগনের সঙ্গে হোলি খেলেছিল আর সেই ঘটনা থেকে উৎপত্তি হয় দোল খেলা। শাস্ত্র অনুসারে বৈষ্ণবীয় উৎসবের শেষ উৎসব দোল উৎসব। হোলি শব্দের উৎপত্তি হয়েছে হোলা থেকে। যার অর্থ হল আগাম ফসলের প্রত্যাশায় ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন। সংস্কৃত শব্দ হোলকা অর্থাৎ অর্ধ-পক্ব শস্য থেকেও হোলি শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে বলে মনে করা হয়।

এবছর দোল পূর্ণিমা কবে?
পূর্ণিমা তিথি শুরু হবে ১৩ মার্চ সকাল ১০.৩৫ মিনিট থেকে। আর তা শেষ হবে ১৪ মার্চ ১২.২৩ মিনিটে।
দোলের আগের দিন কীভাবে শুরু হলো ন্যাড়া পোড়া বা হোলিকা দহন প্রথা?
অর্থ ও গুরুত্ব
হোলিকা দহন হল হিন্দু ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব, যা হোলির আগের রাতে পালিত হয়। এটি পৌরাণিক কাহিনির ওপর ভিত্তি করে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে অসুর রাজা হিরণ্যকশিপুর বোন হোলিকাকে আগুনে পোড়ানো হয়, আর তার ভক্তপুত্র প্রহ্লাদ ঈশ্বরের আশীর্বাদে রক্ষা পায়।

পৌরাণিক কাহিনি:
হিরণ্যকশিপু ছিল এক শক্তিশালী অসুর রাজা, যে চেয়েছিল সবাই তাকে ঈশ্বর হিসেবে পূজা করুক। কিন্তু তার ছেলে প্রহ্লাদ ছিল বিষ্ণুর একনিষ্ঠ ভক্ত। হিরণ্যকশিপু অনেক চেষ্টা করেও প্রহ্লাদকে বিষ্ণুর পূজা করা থেকে বিরত রাখতে পারেনি। শেষে সে তার বোন হোলিকাকে প্রহ্লাদকে আগুনে পুড়িয়ে মারার জন্য বলে। হোলিকার ছিল এক বিশেষ ক্ষমতা—আগুনে পোড়ার হাত থেকে সে রক্ষা পেত। কিন্তু প্রহ্লাদ ঈশ্বরের প্রতি তার বিশ্বাস বজায় রাখে, আর বিষ্ণুর কৃপায় হোলিকা নিজেই আগুনে পুড়ে মারা যায়, কিন্তু প্রহ্লাদ অক্ষত থেকে যায়।

প্রতীকী অর্থ:
সততার জয় ও অসত্যের পরাজয়
অহংকার ও অন্যায়ের বিনাশ
ভক্তির শক্তি ও ঈশ্বরের আশীর্বাদ

উৎসবের আয়োজন ও প্রথা:
হোলির আগের রাতে কাঠ, গাছের শুকনো ডাল ও অন্যান্য দাহ্য বস্তু জড়ো করে হোলিকা দহন করা হয়। আগুন জ্বালিয়ে এর চারপাশে নাচ-গান ও আনন্দ করা হয়। বিশ্বাস করা হয়, এই আগুন পাপ, খারাপ শক্তি ও দুর্ভাগ্যকে ধ্বংস করে এবং মানুষের জীবনে সুখ ও সমৃদ্ধি আনে। পরের দিন রঙের উৎসব হোলি উদযাপিত হয়, যেখানে মানুষ একে অপরকে রঙ মাখিয়ে আনন্দ করে।

হোলিকা দহন শুধুমাত্র ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি সমাজ থেকে অন্যায়, ঘৃণা ও বিদ্বেষ দূর করার প্রতীকও। বর্তমানে পরিবেশের কথা বিবেচনা করে অনেক জায়গায় ইকো-ফ্রেন্ডলি হোলিকা দহন করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে, যেখানে কাঠ অপচয় না করে বিকল্প উপায়ে উদযাপন করা হয়।
রঙে রঙে সাজিয়ে তুলুন নিজেকেও!

হোলি শুধু রঙের উৎসব নয়, এটি আনন্দ, মিলন এবং উদযাপনের প্রতীক। বসন্তের আগমনী বার্তা নিয়ে আসা এই উৎসবে মানুষ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে একে অপরকে রঙ মেখে শুভেচ্ছা জানায়। এই দিনে সাজসজ্জারও বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে, কারণ উজ্জ্বল পোশাক, আরামদায়ক চুলের স্টাইল এবং হোলি-উপযোগী মেকআপ সবার মধ্যে উৎসবের আনন্দ আরও বাড়িয়ে তোলে। সঠিক পোশাক ও সাজগোজ বেছে নিলে হোলির আনন্দ উপভোগ করা যেমন সহজ হবে, তেমনি ত্বক ও চুলও রঙের ক্ষতি থেকে সুরক্ষিত থাকবে।

হোলিতে সাজসজ্জা হওয়া উচিত রঙিন, আরামদায়ক এবং উৎসবমুখর। এখানে কিছু ফ্যাশন ও সাজসজ্জার পরামর্শ দেওয়া হলো:
১. পোশাকের পছন্দ
সাদা বা হালকা রঙের পোশাক: হোলিতে রং আরও উজ্জ্বলভাবে ফুটিয়ে তুলতে সাদা, অফ-হোয়াইট বা হালকা রঙের কুর্তা, টপ, বা শাড়ি পরতে পারেন।
সুতির বা ঢিলেঢালা পোশাক: আরামদায়ক সুতির কাপড় বেছে নিন, যা ত্বকের জন্য উপযুক্ত এবং সহজে শুকিয়ে যায়।
পুরোনো কাপড়: হোলির রঙের দাগ সহজে উঠে না, তাই পুরনো পোশাক পরা ভালো।

২. চুলের সাজ
অয়েলিং: চুলে ভালোভাবে নারকেল বা অলিভ অয়েল লাগান, যাতে রঙ সহজে ধুয়ে যায়।
ব্রেইড বা বান: চুল খোলা না রেখে ব্রেইড, পনিটেল বা বান করে নিন, যাতে কম রং লাগে।
স্কার্ফ বা হেডব্যান্ড: চুল বাঁচাতে ও স্টাইল আনতে স্কার্ফ বা ব্যান্ড ব্যবহার করতে পারেন।
৩. মেকআপ টিপস
ওয়াটারপ্রুফ মেকআপ: ওয়াটারপ্রুফ ফাউন্ডেশন, কাজল ও মাসকারা ব্যবহার করুন, যাতে রঙ ধুয়ে গেলেও মেকআপ নষ্ট না হয়।
লিপ বাম বা পেট্রোলিয়াম জেলি: ঠোঁট শুষ্ক হওয়া রোধ করতে রঙিন লিপ বাম বা জেলি ব্যবহার করুন।
সানস্ক্রিন: রোদ থেকে ত্বক রক্ষা করতে SPF ৩০ বা তার বেশি সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।

৪. এক্সেসরিজ
সানগ্লাস: চোখ রক্ষা করতে রঙিন বা রেট্রো স্টাইলের সানগ্লাস পরতে পারেন।
আরামদায়ক জুতো: হোলির সময় স্যান্ডেল বা ক্যানভাস জুতো পরা ভালো, যা সহজে ধোয়া যায়।
ম্যাচিং ব্যাগ: রঙিন ওয়াটারপ্রুফ ব্যাগ বা স্লিং ব্যাগ সঙ্গে রাখুন, যাতে ফোন, টিস্যু বা ছোট জিনিসপত্র রাখা যায়।
৫. পারফেক্ট হোলি লুক
মেয়েদের জন্য: সাদা কুর্তি + রঙিন স্কার্ফ + ব্রেইডেড চুল + ওয়াটারপ্রুফ মেকআপ + সানগ্লাস।
ছেলেদের জন্য: হালকা রঙের কুর্তা + ডেনিম বা পাজামা + ব্যান্ডানা বা ক্যাপ + ওয়াটারপ্রুফ স্নিকার্স।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো মজা করা! হোলিতে নিজেকে স্বাচ্ছন্দ্যদায়ক এবং উজ্জ্বল রাখার চেষ্টা করুন।

হোলি উৎসবে কীভাবে আপনার ত্বককে সুরক্ষিত রাখবেন?
হোলি, রঙের উৎসব, আপনার ত্বকে কঠোর হতে পারে যদি আপনি প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন না করেন। হোলির রং থেকে আপনার ত্বককে কীভাবে সুরক্ষিত রাখবেন তার টিপস দিলেন সুদেষ্ণা ঘোষ।

প্রাক-হোলি প্রস্তুতি:
ময়েশ্চারাইজ:
আপনার ত্বকে ময়েশ্চারাইজারের একটি পুরু স্তর প্রয়োগ করুন, বিশেষ করে এমন জায়গাগুলিতে যা রঙের সংস্পর্শে আসবে।
তেল লাগান:
রঙের বিরুদ্ধে বাধা তৈরি করতে আপনার ত্বক এবং চুলে নারকেল তেল, জলপাই তেল বা অন্য কোনও তেল লাগান।
আপনার চুল রক্ষা করুন:
আপনার চুলকে রং থেকে রক্ষা করতে একটি চুলের তেল বা সিরাম লাগান।

প্রতিরক্ষামূলক পোশাক পরিধান করুন:
ত্বকের এক্সপোজার কমাতে পুরানো কাপড়, লম্বা হাতা এবং প্যান্ট পরুন।
সানস্ক্রিন প্রয়োগ করুন:
সূর্য থেকে আপনার ত্বককে রক্ষা করতে কমপক্ষে এস পি এফ ৩০ সহ একটি ব্রড-স্পেকট্রাম সানস্ক্রিন লাগান।

হোলির সময়:
কঠোর রাসায়নিক ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন:
রং অপসারণ করতে কঠোর রাসায়নিক বা সাবান ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন, কারণ এগুলো আপনার ত্বকের প্রাকৃতিক তেল ছিনিয়ে নিতে পারে।
মৃদু কালার রিমুভার ব্যবহার করুন:
আপনার ত্বকের রং দূর করতে মৃদু কালার রিমুভার বা ক্লিনজিং মিল্ক ব্যবহার করুন।

ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন:
রং অপসারণ করতে এবং সেগুলিকে সেটিং থেকে আটকাতে ঠান্ডা জল দিয়ে আপনার ত্বক ধুয়ে ফেলুন৷
স্ক্রাবিং এড়িয়ে চলুন:
আপনার ত্বককে খুব শক্তভাবে স্ক্রাব করা এড়িয়ে চলুন, কারণ এটি জ্বালা সৃষ্টি করতে পারে এবং প্রাকৃতিক তেল দূর করতে পারে।

হোলি-পরবর্তী পরিচর্যা:
আবার ময়শ্চারাইজ করুন:
আপনার ত্বককে হাইড্রেট এবং প্রশমিত করতে একটি পুরু স্তরে ময়েশ্চারাইজার লাগান।
মৃদুভাবে এক্সফোলিয়েট করুন:
ত্বকের মৃত কোষ এবং রঙের অবশিষ্টাংশ অপসারণ করতে আপনার ত্বককে আলতোভাবে এক্সফোলিয়েট করুন।

সুথিং মুখোশ ব্যবহার করুন:
আপনার ত্বককে শান্ত এবং হাইড্রেট করতে সুথিং ফেস মাস্ক বা প্যাকগুলি প্রয়োগ করুন।
হাইড্রেটেড থাকুন:
আপনার ত্বককে ভেতর থেকে হাইড্রেটেড রাখতে প্রচুর জল খান।

রঙ মেখে জলযোগ (হোলি পার্টি স্পেশ্যাল রেসিপি)

ঠাণ্ডাই
কী কী লাগবে
২ কাপ ঠান্ডা দুধ
২ টেবিল চামচ চিনি
১০-১২ টি বাদাম
২ টেবিল চামচ পেস্তা
১ চা চামচ সাদা গোলমরিচ
১ চা চামচ মৌরী
২ টি এলাচ
১ চিমটি জাফরান
১ চা চামচ গোলাপ জল
পোস্ত ১ টেবিল চামচ
চারমগজ ১ টেবিল চামচ

কীভাবে বানাবেন
বাদাম, পোস্ত, মৌরী, চারমগজ, গোলমরিচ, এলাচ ও জাফরান ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। এগুলো ভালো করে পেস্ট বানিয়ে নিন। ঠান্ডা দুধের সঙ্গে পেস্ট, চিনি ও গোলাপ জল মিশিয়ে ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করুন। ঠাণ্ডাই গ্লাসে ঢেলে বরফের কিউব দিয়ে পরিবেশন করুন।

গুজিয়া
কী কী লাগবে
২ কাপ ময়দা
২ টেবিল চামচ ঘি
১/২ কাপ মাওয়া (খোয়া ক্ষীর)
১/২ কাপ চিনি
২ টেবিল চামচ কাজু ও কিসমিস
১/২ চা চামচ এলাচ গুঁড়ো
১ কাপ Shalimar's তেল (ভাজার জন্য)

কীভাবে বানাবেন
ময়দার সাথে ঘি মিশিয়ে অল্প পানি দিয়ে মাখুন এবং ৩০ মিনিট ঢেকে রাখুন। মাওয়া, চিনি, কাজু, কিসমিস ও এলাচ গুঁড়ো মিশিয়ে পুর তৈরি করুন। ময়দা থেকে ছোট বল বানিয়ে রুটি বেলে তার মাঝে পুর দিয়ে গুজিয়ার আকৃতি দিন। গরম তেলে হালকা বাদামি করে ভেজে তুলুন। ঠান্ডা হলে পরিবেশন করুন।

দই বড়া
কী কী লাগবে
মাষকলাই ডাল,
টক দই,
তেঁতুল,
বিট নুন,
Shalimar's Chef Spices শুকনো লঙ্কা গুঁড়ো,
চিনি,
সাদা নুন,
ভাজা জিরা গুঁড়ো,
পুদিনাপাতা বাটা,
কাঁচা লঙ্কা বাটা
জল পরিমাণমতো

কীভাবে বানাবেন
প্রথমে মাষকলাই ডাল ভালো করে ধুয়ে অন্তত ৫-৬ ঘণ্টা জলে ভিজিয়ে রাখুন। হাতে অত সময় না থাকলে গরম জলে অন্তত ২-৩ ঘণ্টা ভিজিয়ে নিন। ডাল ভিজে গেলে দই বড়া বানাতে বেশি সময় লাগবে না। ডাল নরম হয়ে এলে মিহি করে ব্লেন্ড করে নিন। ব্লেন্ড করা ডাল একটি বাটিতে নিয়ে সামান্য নুন ও জল দিয়ে ভাল করে ফেটিয়ে নিন। খুব ঘন বা পাতলা যেন না হয়। এমন হবে যে জলে দিলে ভেসে উঠবে। এবার একটি বাটিতে তেঁতুল, সামান্য বিট নুন ও লঙ্কা গুঁড়ো মিশিয়ে আগে থেকেই তেঁতুলের জল তৈরি করে নেবেন। আরেকটি বাটিতে দইয়ের সঙ্গে অল্প চিনি, সাদা নুন, জিরা গুঁড়ো, বিট নুন, পুদিনাপাতা বাটা মিশিয়ে রাখুন। ফেটানো ডাল গোল করে বড়ার আকার করে ছাঁকা তেলে ভেজে নিন। বড়াগুলো ভাজার সঙ্গে সঙ্গে তেঁতুলের জলে ডুবিয়ে দিন। সেগুলি ভিজে গেলে দইয়ের মিশ্রণে ডুবিয়ে দিন। ব্যস, তৈরি দই বড়া। এবার প্লেটে বড়া রেখে উপরে একটু পুদিনাপাতা ও কাঁচা লঙ্কাবাটা এবং দইয়ের মিশ্রণ হালকা করে ছড়িয়ে দিয়ে পরিবেশন করুন।

পাপড়ি চাট
কী কী লাগবে
ময়দা ১ কাপ
খাবার সোডা এক চিমটে
নুন আধ চা চামচ
জোয়ান আধ চা চামচ
কালো জিরে আধ চা চামচ
ঘি ২ টেবিল চামচ
Shalimar's তেল ১ কাপ

কীভাবে বানাবেন
ময়দা ভাল করে চেলে নিন। তাতে খাবার সোডা, নুন, জোয়ান আর কালো জিরে মেশান। এ বার পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘি দিন। জল দিয়ে ভাল করে ময়দা মেখে নিন। ময়দার তাল থেকে ছোট্ট ছোট্ট লেচি কেটে বেলে নিন। পাপড়ির উপরে কাঁটা চামচ দিয়ে ছোট ছোট ফুটো করে নিন। কড়াইয়ে তেল গরম করুন। পাপড়ি ফুটন্তে ছাঁকা তেলে লালচে করে ভেজে তুলে নিন। পাপড়ি চাট বানানোর জন্য পাপড়ি তৈরি। পাপড়িতে আলু, চাটনি, টমেটো সস, কাসুন্দি, ঝুরি, পিঁয়াজ, ধনেপাতা সামান্য নুন, লঙ্কাগুঁড়ো দিয়ে বানানো হয় বিশেষ এই খাবার। চাটনি টক-মিষ্টি স্বাদ, কাসুন্দীর ঝাঁঝে বেশ টক, মিষ্টি স্বাদের হয় এই পাপড়ি চাট..

ফুলকপির সিঙ্গারা
কী কী লাগবে
১/৪ ফুলকপি
১ টা আলু
২টো শুকনো লঙ্কা
১ চা চামচ পাঁচফোড়ন
১ চা চামচ আদা কুচি
২ টো কাঁচা লঙ্কা
১ চা চামচ Shalimar's Chef Spices ধনে, জিরে গুঁড়ো
১/৪ চা চামচ Shalimar's Chef Spices লাল লঙ্কার গুঁড়ো
১/২ চা চামচ Shalimar's Chef Spices হলুদ গুঁড়ো
স্বাদ মত নুন ও চিনি
পরিমাণ মত Shalimar's তেল
১.৫ কাপ ময়দা
১/২ চা চামচ নুন
১/২ চা চামচ চিনি
৩ টেবিল চামচ Shalimar's তেল ময়ানের জন্য
পরিমাণ মত Shalimar's তেল সিঙ্গাড়া ভাজার জন্য

কীভাবে বানাবেন
আলু ও ফুল কপি টুকরো টুকরো করে কেটে নিন এবং গরম জলে ভাপিয়ে নিন। ময়দা নুন চিনি ও তেল দিয়ে মাখিয়ে আলাদা করে রেখে দিন। শুকনো কড়াইয়ে পাঁচফোড়ন ও শুকনো লঙ্কা ভেজে গুঁড়ো করে নিন। আদা ও কাঁচা মরিচ থেঁতো করে নিন। এবার কড়াইয়ে তেল গরম করে তাতে ভাজা মশলা গুঁড়ো দিয়ে ভালো করে ভাজুন। আদা ও কাঁচা মরিচ বাটা দিয়ে মিশিয়ে নিন এবং আলু ও ফুলকপি টুকরো দিয়ে দিন নুন হলুদ দিয়ে ভালো করে ভাজুন। একটু ঢাকা দিয়ে রান্না করুন। কিছুক্ষণ পর ধনে জিরে গুঁড়ো ও লাল লঙ্কার গুঁড়ো দিয়ে মিশিয়ে নিয়ে ভালো করে কষে নিন। স্বাদমত নুন ও চিনি দিয়ে নামিয়ে নিন। এবার ময়দা থেকে লেচি কেটে ছোট ছোট বল বানিয়ে নিন। গোল করে বেলে মাঝখান থেকে কেটে নিন এবং একটি একটি করে ভাজ করে পুর ভরে সিঙ্গারার মত ভাঁজ করে নিন। ৩০ মিনিট আলাদা করে রেখে দিন। তারপর তেল গরম করে তাতে সিঙ্গাড়া দিয়ে ভালো করে ভাজুন। বাদামি রঙের হয়ে এলে তুলে ফেুন। গরম গরম চা ও কফির সঙ্গে পরিবেশন করুন গরম গরম ফুলকপির সিঙ্গারা।

মসলা ফ্রেঞ্চ ফ্রাই
কী কী লাগবে
৩টি বড় আলু (পাতলা ফ্রাই স্টাইলে কাটা)
২ টেবিল চামচ কর্নফ্লাওয়ার (এক্সট্রা ক্রিস্পির জন্য)
১ চা চামচ Shalimar's Chef Spices লাল লঙ্কা গুঁড়ো
১ চা চামচ Shalimar's Chef Spices হলুদ গুঁড়ো
১ চা চামচ Shalimar's Chef Spices চাট মসলা
১ চা চামচ Shalimar's Chef Spices জিরা গুঁড়ো
১ চা চামচ রসুন গুঁড়ো (ঐচ্ছিক)
১ চা চামচ বিট লবণ (বা সাধারণ লবণ)
১ টেবিল চামচ লেবুর রস
ভাজার জন্য Shalimar's তেল
কীভাবে বানাবেন
আলুগুলো ছুলে পাতলা লম্বা ফ্রাই আকারে কাটুন। ১৫-২০ মিনিট ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন যাতে বাড়তি স্টার্চ বের হয়ে যায়। পানি ঝরিয়ে ভালো করে শুকিয়ে নিন। আলুর ফ্রাইগুলোতে কর্নফ্লাওয়ার মিশিয়ে দিন, যাতে এগুলো বেশি ক্রিস্পি হয়। মাঝারি আঁচে একটি প্যানে পর্যাপ্ত তেল গরম করুন। অল্প অল্প করে ফ্রাইগুলো ভেজে নিন যতক্ষণ না সোনালি খাস্তা হয়। টিস্যু পেপারে রেখে অতিরিক্ত তেল শুষে নিন। একটি বাটিতে লাল মরিচগুঁড়ো, হলুদ গুঁড়ো, চাট মসলা, জিরা গুঁড়ো, রসুন গুঁড়ো, এবং বিট লবণ মিশিয়ে নিন। গরম ফ্রাইয়ের ওপরে এই মসলা মিশ্রণ ছিটিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। লেবুর রস ছিটিয়ে দিন টক স্বাদের জন্য। উপর থেকে ধনেপাতা কুচি ছড়িয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন কেচাপ বা পুদিনা চাটনির সাথে।

তরমুজ মোহিতো
কী কী লাগবে
পরিমাণ মত লেবুর ছোটো টুকরো,
৭-৮টি পুদিনা পাতা,
১০-১২টি তরমুজের টুকরো,
২ চা চামচ গুঁড়ো চিনি,
পরিমাণ মত আইস কিউব,
পরিমাণ মতো ঠান্ডা সোডা ওয়াটার।

কীভাবে বানাবেন
প্রথমে গ্লাসে লেবুর টুকরো, পুদিনা পাতা, তরমুজের টুকরো, গুঁড়ো চিনি দিয়ে দিন। কাঠের হাতল দিয়ে থেঁতো করে তরমুজের রস বের করে নিন। সোডা ওয়াটার ও বরফ মিশিয়ে পরিবেশন করুন।

Comments