শিবরাত্রি মহাদেব এবং দেবী পার্বতীর বিয়ের তিথি, অর্থাৎ শিব তথা পুরুষশক্তি এবং আদিশক্তির মিলনের তিথি। এই তিথিতে দেবাদিদেব মহাদেব এবং দেবী পার্বতীর আরাধনায় অজ্ঞতা, অন্ধকার দূর হয়। সারা দিন নির্জলা উপবাস রেখে সারা রাত জেগে শিবপুজো করেন ভক্তরা। "মহাশিবরাত্রি" অর্থ "শিবের মহা রাত্রি," যা মহাদেব শিবকে উৎসর্গ করা একটি উৎসব। এটি প্রতি বছর ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণ চতুর্দশী তিথিতে পালিত হয়। এই উৎসবের গভীর আধ্যাত্মিক ও পৌরাণিক গুরুত্ব রয়েছে।

ঐতিহাসিক ও পৌরাণিক গুরুত্ব:
শিব ও পার্বতীর বিয়ে:
একটি কিংবদন্তি অনুযায়ী, মহাশিবরাত্রির দিনেই ভগবান শিব দেবী পার্বতীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। শিব ও পার্বতীর বিয়ে হিন্দু পুরাণের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও জনপ্রিয় কাহিনি। এই কাহিনি মূলত শিব পুরাণ, স্কন্দ পুরাণ, রামায়ণ, ও মহাভারত-এ বিভিন্নভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। শুম্ভ-নিশুম্ভ, তাড়কাসুরসহ অনেক দৈত্যের তাণ্ডবের ফলে দেবতারা মহাদেবের কাছে সাহায্যের জন্য যান। তাড়কাসুরকে পরাস্ত করার জন্য শিব-পুত্রের জন্ম প্রয়োজন ছিল, কিন্তু শিব তপস্যায় মগ্ন ছিলেন। অন্যদিকে, রাজা হিমালয়ের কন্যা পার্বতী ছোটবেলা থেকেই শিবকে স্বামী হিসেবে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা করতেন। শিবের মনোযোগ আকর্ষণ করতে দেবর্ষি নারদের পরামর্শে পার্বতী কঠোর তপস্যা শুরু করেন। এই সময়, দেবরাজ ইন্দ্র ও দেবতারা কামদেবকে অনুরোধ করেন, যাতে তিনি শিবের ধ্যান ভঙ্গ করেন। কামদেব শিবের ধ্যান ভঙ্গ করতে সফল হলেও, রাগান্বিত শিব তৃতীয় নেত্র খুলে তাকে ভস্ম করে দেন। পরে, পার্বতীর কঠোর তপস্যায় শিব সন্তুষ্ট হন এবং তাকে নিজের স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করতে সম্মত হন। বিবাহের জন্য এক বিশাল আয়োজন করা হয়। শিব বারাত নিয়ে উপস্থিত হন, যেখানে বিভিন্ন গুণ্ড, ভূত-প্রেত, পিশাচরা অংশ নেয়। বরযাত্রীদের ভয়ঙ্কর রূপ দেখে পার্বতীর মা মেনকা আতঙ্কিত হন। কিন্তু শিব পরে এক মনোহর রূপ ধারণ করেন, যা দেখে সবাই অভিভূত হয়। ভক্তরা উপবাস, প্রার্থনা ও রাতব্যাপী জাগরণ করে এই শুভ দিনটি উদযাপন করেন।

সমুদ্র মন্থন ও হলাহল বিষ
আরেকটি কাহিনী অনুসারে, সমুদ্র মন্থনের সময় এক প্রাণঘাতী বিষ (হলাহল) উৎপন্ন হয়েছিল, যা সমগ্র বিশ্ব ধ্বংস করতে পারত। ভগবান শিব সেই বিষ পান করে বিশ্বকে রক্ষা করেন এবং তার গলায় ধারণ করেন, যার ফলে তাঁর কণ্ঠ নীল হয়ে যায়। এজন্য তিনি নীলকণ্ঠ নামে পরিচিত। মহাশিবরাত্রি সেই শুভ রাত্রি যখন এই ঘটনাটি ঘটেছিল বলে বিশ্বাস করা হয়।
শিবের তাণ্ডব নৃত্য
বলা হয়, মহাশিবরাত্রির দিন শিব তাঁর তাণ্ডব নৃত্য করেছিলেন, যা সৃষ্টির, সংরক্ষণের ও বিনাশের প্রতীক। শিবের তাণ্ডব নৃত্য হিন্দু ধর্মের এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং গম্ভীর ঘটনা। শিব এই নৃত্যের মাধ্যমে বিশ্ব প্রকৃতির চক্র পরিচালনা করেন। শিবের তাণ্ডব নৃত্যকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা হয়:
রুদ্র তাণ্ডব (বিনাশের নৃত্য)
এটি হলো ক্রোধ ও ধ্বংসের প্রতীক। যখন শিব ক্রোধান্বিত হন বা মহাবিনাশের সময় উপস্থিত হয়, তখন তিনি রুদ্র তাণ্ডব করেন। এটি ব্রহ্মাণ্ডের ধ্বংস ও পুনর্জন্মের সংকেত বহন করে।
আনন্দ তাণ্ডব (সৃষ্টির নৃত্য)
এটি শিবের শুভ, সৃষ্টিশীল ও কল্যাণময় রূপের প্রকাশ। এই নৃত্য সৃষ্টির উদযাপন ও বিশ্বজগতের শৃঙ্খলা রক্ষার প্রতীক।

শিবলিঙ্গ রূপে শিবের আবির্ভাব:
আরেকটি বিশ্বাস অনুযায়ী, এই দিনে শিব এক অনন্ত জ্যোতিরূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন, যা তাঁর অসীম শক্তির প্রতীক। তাই মহাশিবরাত্রিতে ভক্তরা শিবলিঙ্গের পূজা করেন। একবার ব্রহ্মা (সৃষ্টিকর্তা) ও বিষ্ণুর (সংরক্ষণকর্তা) মধ্যে তর্ক শুরু হয়, কে সর্বশ্রেষ্ঠ দেবতা। এই বিতর্ক ক্রমেই তীব্র হয়ে ওঠে এবং তা মীমাংসার জন্য মহাদেবের আশ্রয় নেওয়া হয়।
ঠিক তখনই, হঠাৎ করে এক বিশাল জ্যোতির্লিঙ্গ (এক অসীম আলো ও শক্তির স্তম্ভ) আবির্ভূত হয়। এর উচ্চতা ও গভীরতা বোঝার জন্য ব্রহ্মা ও বিষ্ণু প্রতিযোগিতা করেন। ব্রহ্মা উপরের দিকের শেষ খুঁজতে হাঁস রূপ ধারণ করে আকাশে উড়ে যান। বিষ্ণু নীচের দিকের শেষ দেখতে বরাহ (শূকর) রূপে পাতালে প্রবেশ করেন। কিন্তু দুজনেই ব্যর্থ হন, কারণ সেই আলোকস্তম্ভের কোন সীমা ছিল না। ব্রহ্মা তখন মিথ্যা বলেন যে তিনি শিবলিঙ্গের শীর্ষ খুঁজে পেয়েছেন এবং তাঁর সাক্ষী হিসেবে কেতকী ফুলকে হাজির করেন। কিন্তু শিব তখন আবির্ভূত হয়ে ব্রহ্মার মিথ্যাচার প্রকাশ করেন এবং তাকে অভিশাপ দেন যে ভবিষ্যতে ব্রহ্মার পূজা হবে না। অপরদিকে, বিষ্ণু সত্য স্বীকার করায় শিব তাকে আশীর্বাদ করেন। এই ঘটনা বোঝায় যে শিব অখণ্ড, অসীম এবং তিনটি শক্তির (সৃষ্টি, সংরক্ষণ, বিনাশ) আধার।

শিবলিঙ্গের তাৎপর্য:
শিবলিঙ্গ মূলত দুই অংশে বিভক্ত:
লিঙ্গ (উর্ধ্বমুখী স্তম্ভ): পুরুষ শক্তির প্রতীক, যা সৃষ্টি ও চেতনাশক্তির নির্দেশক।
যোনি (নীচের বৃত্তাকার অংশ): প্রকৃতি ও নারীত্বের প্রতীক, যা শক্তির উৎস।
শিবপূজার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রীতি হলো চতুর্প্রহরে শিবপূজা, যা বিশেষত মহাশিবরাত্রি, শ্রাবণ মাসের সোমবার, এবং প্রদোষ ব্রত-তে বিশেষভাবে পালন করা হয়। এই পূজা সারারাত ধরে চারটি প্রহরে (প্রতি ৩ ঘণ্টায় এক প্রহর) সম্পন্ন হয়, যা শিবতত্ত্বের গভীর দিকগুলোর প্রতিফলন ঘটায়।

চতুর্প্রহরের বিভাজন ও তাৎপর্য:
১ম প্রহর (সন্ধ্যা ৬টা - রাত ৯টা): আত্মশুদ্ধি ও সংযম
শুদ্ধতা, সংযম, এবং শিবের প্রতি ভক্তির প্রকাশ। এই সময় শিবলিঙ্গে দুধ নিবেদন করা হয়, যা শান্তি ও প্রশান্তির প্রতীক।
২য় প্রহর (রাত ৯টা - ১২টা): কামনাবর্জন ও ভক্তি
পার্থিব মোহ-মায়া থেকে মুক্তির জন্য প্রার্থনা। শিবলিঙ্গে দই নিবেদন করা হয়, যা শুদ্ধ চেতনার প্রতীক।

৩য় প্রহর (রাত ১২টা - ৩টা): আত্মজ্ঞান ও চৈতন্যের উন্মেষ
শিবের গহন রহস্যময় শক্তির আরাধনা করা হয়। শিবলিঙ্গে ঘি নিবেদন করা হয়, যা জ্ঞানের দীপ্তির প্রতীক।
৪র্থ প্রহর (রাত ৩টা - ভোর ৬টা): মোক্ষ ও পরমাত্মার সঙ্গে একত্ব
চূড়ান্ত মোক্ষ বা পরম সত্য উপলব্ধির উপাসনা। শিবলিঙ্গে মধু ও গঙ্গাজল নিবেদন করা হয়, যা অমৃততুল্য অনন্ত জীবনের প্রতীক।

পূজার নিয়মাবলি:
ভোরে স্নান করে শুদ্ধ মনে উপবাস শুরু করা হয়।
বিল্বপত্র, আকন্দ, ধুতুরা, ও বাসক ফুল নিবেদন করা হয়।
শিবপঞ্চাক্ষর মন্ত্র ("ॐ नमः शिवाय") বা মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র জপ করা হয়।
শিবলিঙ্গে বিভিন্ন উপাদান (দুধ, দই, ঘি, মধু, গঙ্গাজল) দিয়ে অভিষেক করা হয়।
রাত্রি জাগরণ ও শিবকথা শ্রবণ করা হয়।
ব্রাহ্মণ বা দরিদ্রদের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।

এবছর শিবরাত্রি কবে?
চতুর্দশী তিথি আরম্ভ: ১৪ ফাল্গুন, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি, বুধবার, সময় সকাল ১১টা ১০ মিনিট।
চতুর্দশী তিথি শেষ: ১৫ ফাল্গুন, বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার, সময় সকাল ৮টা ৫৫ মিনিট।
এইদিনে পঞ্চামৃত দিয়ে শিবলিঙ্গের অভিষেক করুন। এরপর আট কলসি জাফরান মিশ্রিত জল শিবলিঙ্গে নিবেদন করুন। ঠাকুর ঘরের প্রদীপ সারারাত যেন অবশ্যই জ্বলে। চন্দনের তিলক লাগান। বেলপাতা, ভাঙ, ধুতরো, আখের রস, পদ্মবীজ, ফল ও মিষ্টি দিয়ে পুজো করুন। মহা শিবরাত্রি আত্ম উন্নতির এক মহা সুযোগ হিসেবে গণ্য হয়। অনেকেই ধ্যান ও আত্মবিশ্লেষণে নিযুক্ত থাকেন। এটি শিবভক্তদের জন্য অন্যতম প্রধান উৎসব, যা অন্ধকারের উপর আলো এবং আত্মনিয়ন্ত্রণ ও ভক্তির গুরুত্বকে প্রতিফলিত করে।

সাউদার্ন ক্র্যাব নীহারিকা এবং মহাদেবের ডমরু: এক মহাজাগতিক সংযোগ
বিশ্বব্রহ্মাণ্ড অসংখ্য রহস্যে ভরা, যেখানে মহাজাগতিক গঠন প্রায়ই প্রাচীন আধ্যাত্মিক ও দার্শনিক ধারণার প্রতিফলন ঘটায়। এমনই এক বিস্ময়কর মিল দেখা যায় সাউদার্ন ক্র্যাব নীহারিকা (Southern Crab Nebula বা Hen 2-104) এবং মহাদেবের ডমরু-এর মধ্যে। সাউদার্ন ক্র্যাব নীহারিকা হল এক দ্বিমুখী (bipolar) নীহারিকা, যা সেন্টরাস (Centaurus) নক্ষত্রমণ্ডলে অবস্থিত। অপরদিকে, শিবের ডমরু হল সৃষ্টি, বিনাশ এবং মহাজাগতিক ছন্দের প্রতীক। তবে জানেন কি, নাসার হাবল টেলিস্কোপে তোলা দক্ষিণ ক্র্যাব নেবুলার ছবিটি দেখতে ঠিক শিবের ডমরুর মতো? লিখেছেন কৃশানু মিত্র।

সাউদার্ন ক্র্যাব নীহারিকা: এক মহাজাগতিক বালি-ঘড়ির রূপ:
সাউদার্ন ক্র্যাব নীহারিকা, যা প্রায় ৭,০০০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত, প্রথম ১৯৬৭ সালে আবিষ্কৃত হয়। এর আকৃতি দেখতে অনেকটা একটি বালি-ঘড়ির মতো (hourglass shape), যা একটি মৃতপ্রায় লাল দানব (red giant) তারকা এবং তার সঙ্গী শ্বেত বামন (white dwarf) তারকার পারস্পরিক ক্রিয়ার ফলে সৃষ্টি হয়েছে। এই নীহারিকার অন্যতম বিশেষত্ব হল এর দ্বিমুখী লোব (bipolar lobes), যা তারকা থেকে নির্গত গ্যাস ও ধূলিকণার ফলে তৈরি হয়েছে। আকৃতিগতভাবে এটি একটি মহাজাগতিক ডমরুর মতো দেখায়, যা শিবের ডমরুর প্রতীকী রূপের সঙ্গে চমৎকার মিল রাখে। এই নীহারিকা নিয়মিত শক্তির বিস্ফোরণ ঘটায়, যা অনেকটা শিবের ডমরুর ছন্দময় নিনাদের মতো, যা সৃষ্টি ও বিনাশের চক্র নিয়ন্ত্রণ করে।

মহাদেবের ডমরু: বিশ্বজগতের ধ্বনি ও স্পন্দন:
হিন্দু পুরাণে, মহাদেবের ডমরু শুধুমাত্র একটি বাদ্যযন্ত্র নয়; এটি হল মহাজাগতিক কম্পন (cosmic vibration), চক্রবৃদ্ধি (cyclic nature), এবং সৃষ্টির মৌলিক ছন্দের প্রতীক।
ডমরুর আধ্যাত্মিক তাৎপর্য:
ডমরুর নিনাদ থেকে জন্ম নিয়েছিল মহেশ্বরসূত্র, যা সংস্কৃত ভাষার মূল ভিত্তি। ডমরুর সম্প্রসারণ ও সংকোচন প্রতিফলিত করে সৃষ্টি ও বিনাশের চক্র, যা মহাজাগতিক সম্প্রসারণ ও সংকোচনের ধারণার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ডমরুর দ্বৈত মুখ (two faces) প্রতিফলিত করে দ্বৈততা ও ভারসাম্য, যা সাউদার্ন ক্র্যাব নীহারিকার দ্বিমুখী গঠন-এর সঙ্গে মিলে যায়।

কীভাবে সাউদার্ন ক্র্যাব নীহারিকা শিবের ডমরুর সঙ্গে সম্পর্কিত?
বালি ঘড়ির মতো রূপ ও ডমরু:
সাউদার্ন ক্র্যাব নীহারিকার দ্বিমুখী লোব দেখতে একটি বালি-ঘড়ির মতো, যা শিবের ডমরুর গঠনের সঙ্গে মিলে যায়।
এই নীহারিকা গঠিত হয়েছে দুটি নক্ষত্রের পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ার ফলে, যেমন ডমরুর দুটি মুখ একসঙ্গে সঙ্গীত সৃষ্টি করে।
সৃষ্টি ও বিনাশের চক্র:
সাউদার্ন ক্র্যাব নীহারিকা হল তারার বিবর্তনের একটি ধাপ, যেখানে একটি মৃতপ্রায় তারকার উপাদান ছড়িয়ে পড়ে এবং নতুন মহাজাগতিক গঠনের সৃষ্টি করে। তেমনই, শিবের ডমরু প্রতীকায়িত করে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের চক্রবৃদ্ধি, যেখানে পুরাতন ধ্বংস হয় এবং নতুন সৃষ্টির জন্ম হয়।

মহাজাগতিক কম্পন ও স্পন্দন:
সাউদার্ন ক্র্যাব নীহারিকা থেকে নির্গত শক্তির বিস্ফোরণ অনেকটা শিবের ডমরুর তালবদ্ধ ধ্বনির মতো, যা মহাজাগতিক ছন্দ তৈরি করে। এই বিস্ফোরণ থেকে নির্গত উপাদান ছড়িয়ে পড়ে মহাবিশ্বে নতুন তারার জন্ম দেয়, যা শিবের সৃজনশীল শক্তির প্রতীক।
দ্বৈততা ও মহাজাগতিক ভারসাম্য:
সাউদার্ন ক্র্যাব নীহারিকা একটি দ্বৈত নক্ষত্র ব্যবস্থা (binary system) দ্বারা গঠিত, যেখানে দুটি তারকার মিথস্ক্রিয়ায় এই আকৃতি তৈরি হয়েছে। ডমরুর দুটি মুখ ঠিক একইভাবে প্রতিফলিত করে সৃষ্টির-বিনাশের দ্বৈততা, শব্দ ও নীরবতা, সম্প্রসারণ ও সংকোচন, যা নীহারিকার গঠনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

বিজ্ঞান ও আধ্যাত্মিকতার সংযোগ:
সাউদার্ন ক্র্যাব নীহারিকা এবং শিবের ডমরুর মধ্যে সম্পর্ক প্রমাণ করে যে আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞান এবং প্রাচীন হিন্দু দর্শন এক অভিন্ন সত্যের প্রকাশ। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা নীহারিকাগুলোর বিশ্লেষণের মাধ্যমে মহাবিশ্বের তারার বিবর্তন, শক্তির বিস্তার এবং গঠন প্রক্রিয়া বোঝার চেষ্টা করেন। হিন্দু শাস্ত্রে বলা হয়েছে যে মহাবিশ্ব ছন্দের মাধ্যমে পরিচালিত হয়, যা শিবের তাণ্ডব নৃত্য ও ডমরুর কম্পনের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। এই দুই দৃষ্টিভঙ্গিই একটাই সত্য প্রতিষ্ঠা করে বিশ্বব্রহ্মাণ্ড চির পরিবর্তনশীল এবং এক অনন্ত নৃত্যের মধ্য দিয়ে চলছে, যেখানে সৃষ্টি ও বিনাশের চক্র অব্যাহত থাকে।

সাউদার্ন ক্র্যাব নীহারিকা এবং শিবের ডমরু এই দুটি ধারণাই এক অভিন্ন মহাজাগতিক সত্যের প্রতিফলন। একদিকে নীহারিকার আকৃতি শিবের ডমরুর গঠনের মতো, অপরদিকে এর শক্তির বিস্ফোরণ মহাজাগতিক স্পন্দনের প্রতিফলন, যা বিশ্বের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। যখন আমরা সাউদার্ন ক্র্যাব নীহারিকার দিকে তাকাই, তখন হয়তো আমরা একটি মহাজাগতিক ডমরুর প্রতিফলন দেখি, যা শিবের তাণ্ডব নৃত্যের অনুরণন সৃষ্টি করছে এবং বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের চিরন্তন সঙ্গীত বাজিয়ে চলেছে।


বাংলার উৎসবের নিরামিষ রান্না
যদিও বাঙালি রান্নায় মাছ ও সামুদ্রিক খাবারের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে, তবে নিরামিষ খাবারের বৈচিত্র্য এবং স্বাদ ও কোনো অংশে কম নয়। বাঙালি নিরামিষ রান্নায় সর্ষের তেল, পাঁচফোড়ন, পোস্ত, সরষে এবং স্থানীয়ভাবে উৎপন্ন বিভিন্ন শাক-সবজি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই ঘরানার রান্নার বিশেষত্ব হলো স্বাদের নিখুঁত ভারসাম্য। শুক্তোর মিষ্টি এবং হালকা তিঁতকুটে স্বাদ, ছোলার ডাল এর মিষ্টত্ব, পোস্তর গা মাখা ভাব এবং বেগুন ভর্তার মাটির গন্ধ। এখানে মুগ ও ছোলা ডালের মতো ডাল জাতীয় খাবার ও প্রতিদিনের খাদ্যতালিকার অপরিহার্য অংশ। ডাল দিয়ে তৈরি ধোঁকার ডালনা বাঙালি নিরামিষ রান্নার সৃজনশীলতার এক উৎকৃষ্ট উদাহরণ। বাঙালি নিরামিষ রান্না ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। অনেক পদ বিশেষ করে উৎসব ও পার্বণেই রান্না করা হয়। এইরকম একডজন রেসিপি নিয়ে এবারের আয়োজন বাংলার উৎসবের নিরামিষ রান্না।

লাবড়া (পাঁচমিশালি সবজির তরকারি)
খিচুড়ি বা পূজার প্রসাদ হিসেবে লাবড়া এক অনিবার্য পদ। এটি পাঁচ-ছয় রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা হয়।
কী কী লাগবে
১ কাপ কুমড়ো (মোটা করে কাটা)
১/২ কাপ আলু (কাটা)
১/২ কাপ মিষ্টি আলু
১/২ কাপ বাঁধাকপি
১/২ কাপ বেগুন
১ চা চামচ পাঁচফোড়ন
২ শুকনো লাল লঙ্কা
১ চা চামচ আদা বাটা
১ চা চামচ Shalimar's Chef Spices হলুদ গুঁড়ো
১ চা চামচ Shalimar's Chef Spices জিরা গুঁড়ো
১ চা চামচ চিনি
২ টেবিল চামচ Shalimar's সর্ষের তেল
পরিমাণমতো নুন
কীভাবে বানাবেন
কড়াইতে সর্ষের তেল গরম করে পাঁচফোড়ন ও শুকনো লঙ্কা ফোড়ন দিন। সবজি যোগ করে নুন, হলুদ, জিরা গুঁড়ো ও আদা বাটা দিয়ে ভালোভাবে নাড়ুন। অল্প জল দিয়ে ঢেকে রাখুন, যতক্ষণ না সবজি নরম হয়। চিনি মিশিয়ে ২ মিনিট নেড়ে গরম গরম পরিবেশন করুন খিচুড়ির সঙ্গে।

নেমন্তন্ন বাড়ির দুধশুক্তো রেসিপি
শুক্তো বাঙালি খাবারের এক অনন্য পদ, যা হালকা তেতো স্বাদের জন্য বিশেষভাবে জনপ্রিয়। সাধারণত এটি দুপুরের খাবারের শুরুতে পরিবেশন করা হয় এবং শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।
কী কী লাগবে
১টি করলা চওড়া কাটা
১/২ কাপ কাঁচা কলা, টুকরো করা
১/২ কাপ আলু, কাটা
১/২ কাপ ঝিঙে, কাটা
১/২ কাপ কুমড়ো, কাটা
১/২ কাপ বরবটি, কাটা
১/২ চা চামচ পাঁচফোড়ন
২ শুকনো লঙ্কা
২ টেবিল চামচ Shalimar's সর্ষের তেল
১ চা চামচ পোস্ত বাটা
১ চা চামচ সর্ষে বাটা (ঐচ্ছিক)
১ কাপ দুধ
১ চা চামচ মুগ ডাল (ভাজা)
১ চা চামচ চিনি
১/২ চা চামচ ঘি
১/২ চা চামচ নুন

কীভাবে বানাবেন
করলা আলাদাভাবে অল্প তেলে ভেজে তুলে রাখুন। কড়াইতে সর্ষের তেল গরম করে পাঁচফোড়ন ও শুকনো লঙ্কা ফোড়ন দিন। পটল, কাঁচা কলা, আলু, ঝিঙে, কুমড়ো ও বরবটি দিয়ে নাড়ুন। সামান্য নুন ও চিনি যোগ করে ঢেকে দিন। সবজি কিছুটা নরম হলে পোস্ত ও সর্ষে বাটা মিশিয়ে দিন। এবার ভাজা মুগ ডাল ও দুধ ঢেলে দিন এবং ভালোভাবে মেশান। করলা যোগ করে ৫ মিনিট রান্না করুন। রান্না শেষে ঘি ছড়িয়ে নামিয়ে নিন।

ছানার ডালনা রেসিপি
ছানার ডালনা একটি জনপ্রিয় বাঙালি নিরামিষ পদ, যা পূজা-পার্বণ বা নিরামিষ দিনের জন্য উপযুক্ত। এটি নরম ছানার টুকরো দিয়ে সুগন্ধি মশলা ও টমেটোর গ্রেভিতে তৈরি করা হয়।
কী কী লাগবে
ছানার জন্য:
১ লিটার দুধ
২ টেবিল চামচ লেবুর রস বা ভিনেগার
১ চা চামচ ময়দা (ছানার টুকরো ভাজার জন্য)
১ চিমটি Shalimar's Chef Spices হলুদ গুঁড়ো
১ চিমটি নুন
২ টেবিল চামচ Shalimar's সর্ষের তেল
ডালনার জন্য:
১ মাঝারি আলু (টুকরো করা)
১ মাঝারি টমেটো (কুচি করা)
১ চা চামচ আদা বাটা
১/২ চা চামচ Shalimar's Chef Spices জিরা গুঁড়ো
১ চা চামচ Shalimar's Chef Spices ধনে গুঁড়ো
১/২ চা চামচ Shalimar's Chef Spices গরম মসলা
১ চা চামচ Shalimar's Chef Spices লাল লঙ্কা গুঁড়ো
১/২ চা চামচ Shalimar's Chef Spices হলুদ গুঁড়ো
১ চা চামচ চিনি
স্বাদ অনুযায়ী নুন
২ টেবিল চামচ Shalimar's সর্ষের তেল
১/২ চা চামচ ঘি

কীভাবে বানাবেন
দুধ ফুটিয়ে নিন। লেবুর রস বা ভিনেগার দিয়ে নাড়তে থাকুন যতক্ষণ না দুধ ফেটে যায়। ছানা ছেঁকে ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে নিন এবং অতিরিক্ত জল ঝরিয়ে দিন। ছানার মধ্যে সামান্য ময়দা, নুন ও হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে ভালো করে মেখে নিন। এবার ছোট ছোট টুকরো কেটে ছানার বরফি বানান এবং অল্প তেলে হালকা ভেজে তুলে রাখুন। কড়াইতে সর্ষের তেল গরম করে আলুর টুকরো হালকা ভেজে তুলে রাখুন। তেলের মধ্যে টমেটো, আদা বাটা, হলুদ, লঙ্কা, ধনে ও জিরা গুঁড়ো দিয়ে কষিয়ে নিন। মশলা থেকে তেল ছাড়লে ভাজা আলু দিয়ে দিন এবং ১ কাপ গরম জল দিন। আলু সেদ্ধ হলে ছানার টুকরো দিয়ে দিন। চিনি ও নুন মিশিয়ে কিছুক্ষণ ঢেকে রান্না করুন। শেষে গরম মসলা ও ঘি ছড়িয়ে নামিয়ে নিন। গরম গরম ছানার ডালনা ভাত, রুটি বা লুচির সঙ্গে পরিবেশন করুন।

দই ফুলকপি রেসিপি
দই ফুলকপি বাঙালির এক জনপ্রিয় নিরামিষ পদ, যা সুগন্ধি মশলা ও টক দইয়ের দারুণ সংমিশ্রণে তৈরি হয়। এটি ভাত বা রুটির সঙ্গে খেতে দারুণ লাগে, বিশেষ করে পূজা বা নিরামিষ খাবারের দিনে।
কী কী লাগবে
১টি মাঝারি ফুলকপি (মাঝারি টুকরো করা)
১/২ কাপ টক দই
১টি মাঝারি আলু (চৌকো করে কাটা)
১টি মাঝারি টমেটো (কুচি করা)
১ চা চামচ আদা বাটা
১/২ চা চামচ Shalimar's Chef Spices হলুদ গুঁড়ো
১ চা চামচ Shalimar's Chef Spices লাল লঙ্কা গুঁড়ো
১ চা চামচ Shalimar's Chef Spices জিরা গুঁড়ো
১ চা চামচ Shalimar's Chef Spices ধনে গুঁড়ো
১/২ চা চামচ Shalimar's Chef Spices গরম মসলা
১টি তেজপাতা
১ চা চামচ গোটা জিরা
২টি শুকনো লঙ্কা
১ চা চামচ চিনি (ঐচ্ছিক)
স্বাদ অনুযায়ী নুন
৩ টেবিল চামচ Shalimar's সর্ষের তেল বা ঘি

কীভাবে বানাবেন
ফুলকপি ও আলুতে সামান্য নুন ও হলুদ মাখিয়ে হালকা তেলে ভেজে তুলে রাখুন। একটি বাটিতে দই ফেটে নিন, যাতে কোনো দানা না থাকে। কড়াইতে সর্ষের তেল গরম করে তেজপাতা, গোটা জিরা ও শুকনো লঙ্কা ফোড়ন দিন। এরপর টমেটো, আদা বাটা, হলুদ, লঙ্কা, জিরা ও ধনে গুঁড়ো দিয়ে কষিয়ে নিন। মশলা থেকে তেল ছাড়লে দই দিয়ে ভালোভাবে নাড়ুন (মাঝারি আঁচে)। এবার ভাজা ফুলকপি ও আলু দিয়ে মিশিয়ে দিন। ১/২ কাপ গরম জল দিয়ে ঢাকা দিয়ে ১০ মিনিট রান্না করুন। শেষে গরম মসলা ও সামান্য চিনি দিয়ে ২ মিনিট নেড়ে নামিয়ে নিন।

বাদাম ও কারিপাতা দিয়ে ঝুরি আলুভাজা
এই রেসিপিতে মচমচে ঝুরি আলুর সঙ্গে বাদাম ও কারিপাতার অসাধারণ স্বাদ যোগ করে এক নতুন স্বাদ তৈরি করা হয়। এটি শুধু ভাত বা খিচুড়ির সঙ্গে নয়, স্ন্যাক্স হিসেবেও দারুণ উপযোগী।
কী কী লাগবে
২টি বড় আলু
১/৪ কাপ চিনাবাদাম (বাদাম)
৮-১০টি কারিপাতা
১/২ চা চামচ নুন
১ চিমটি Shalimar's Chef Spices হলুদ গুঁড়ো (ঐচ্ছিক)
১/২ চা চামচ Shalimar's Chef Spices লঙ্কা গুঁড়ো (ঐচ্ছিক)
১ চিমটি চাট মসলা (ঐচ্ছিক)
১ কাপ Shalimar's সর্ষের তেল বা সাদা তেল (ভাজার জন্য)
কীভাবে বানাবেন
আলুগুলো ধুয়ে খোসা ছাড়িয়ে নিন। কুরুনি দিয়ে আলুগুলোকে ঝুরি করে কেটে নিন। কাটা আলুগুলো ঠান্ডা জলে ১০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন (স্টার্চ কমানোর জন্য)। এরপর জল ঝরিয়ে কিচেন টিস্যু দিয়ে শুকনো করে নিন। কড়াইতে তেল গরম করুন। প্রথমে চিনাবাদাম দিয়ে হালকা বাদামি করে ভেজে তুলে রাখুন। এরপর কারিপাতা দিয়ে ভাজুন (১০-১৫ সেকেন্ড) এবং তুলে রাখুন। এবার ঝুরি আলুগুলো দিয়ে মচমচে করে ভাজুন, মাঝেমধ্যে নাড়তে থাকুন যাতে সমানভাবে ভাজা হয়। হালকা বাদামি রং হলে তুলে কিচেন পেপারে রাখুন। ভাজা ঝুরি আলুর মধ্যে নুন, লঙ্কা গুঁড়ো ও চাট মসলা ছড়িয়ে দিন। এবার ভাজা বাদাম ও কারিপাতা মিশিয়ে নিন।

নবরত্ন কোরমা
নবরত্ন কোরমা একটি সমৃদ্ধ, মিষ্টি-নোনতা স্বাদের মোগলাই নিরামিষ পদ, যেখানে ন'রকমের সবজি, শুকনো ফল ও পনির ব্যবহার করা হয়। এটি বিশেষত উৎসব বা অতিথি আপ্যায়নের জন্য আদর্শ, এবং নান, পরোটা বা পোলাওয়ের সঙ্গে দারুণ লাগে।
কী কী লাগবে
সবজির জন্য:
১/২ কাপ গাজর (কাটা)
১/২ কাপ মটরশুঁটি
১/২ কাপ ফুলকপি (ছোট টুকরো)
১/২ কাপ বিনস (ছোট কাটা)
১/২ কাপ মিষ্টি কুমড়ো (ঐচ্ছিক)
১/২ কাপ আলু (সেদ্ধ ও কাটা)
১/২ কাপ পনির (কিউব করে কাটা)
৮-১০টি কাজু
৮-১০টি কিসমিস
৫-৬টি কাঠবাদাম
১ টেবিল চামচ নারকেল কুচি

মশলা ও গ্রেভির জন্য:
২টি মাঝারি টমেটো (পেস্ট)
১/৪ কাপ টক দই (ফেটানো)
১ চা চামচ আদা বাটা
১ চা চামচ ধনে গুঁড়ো
১/২ চা চামচ Shalimar's Chef Spices জিরা গুঁড়ো
১ চা চামচ Shalimar's Chef Spices লঙ্কা গুঁড়ো
১/২ চা চামচ Shalimar's Chef Spices গরম মসলা
১/২ চা চামচ Shalimar's Chef Spices হলুদ গুঁড়ো
১ চা চামচ চিনি
স্বাদ অনুযায়ী নুন
২ টেবিল চামচ Shalimar's সর্ষের তেল বা ঘি

ফোড়নের জন্য:
১টি তেজপাতা
২টি ছোট এলাচ
১টি দারচিনি স্টিক
২টি লবঙ্গ
১ চা চামচ জিরা
কীভাবে বানাবেন
কড়াইতে সামান্য তেল গরম করে কাজু, কিসমিস ও পনির হালকা ভেজে তুলে রাখুন। এবার সবজি হালকা ভেজে তুলে রাখুন। কড়াইতে ঘি বা তেল দিয়ে তেজপাতা, এলাচ, দারচিনি, লবঙ্গ ও জিরা দিন। এবার টমেটো পেস্ট ও আদা বাটা দিয়ে ভালো করে কষিয়ে নিন। ধনে গুঁড়ো, জিরা গুঁড়ো, লঙ্কা গুঁড়ো, হলুদ, চিনি ও নুন দিয়ে ভালো করে কষান। মশলা থেকে তেল ছাড়লে দই দিয়ে ভালোভাবে নাড়ুন। কষানো মশলার মধ্যে ভাজা সবজি, পনির, কাজু-কিসমিস ও নারকেল কুচি দিয়ে দিন। ১/২ কাপ গরম জল দিয়ে ৫-৭ মিনিট ঢাকা দিয়ে রান্না করুন। গরম মসলা ছড়িয়ে দিন ও আরও ২ মিনিট রান্না করুন। চাইলে একটু কেওড়া জল বা গোলাপ জল দিতে পারেন (ঐচ্ছিক)। গরম গরম নবরত্ন কোরমা নান, পরোটা বা পোলাওয়ের সঙ্গে পরিবেশন করুন।

ছানার পুর ভরা পটলের দোলমা
একদম বাঙালি স্বাদের একটি দারুণ পদ। মশলাদার গ্রেভির সাথে নরম পটল ও ছানার পুরের সংমিশ্রণ এক অনন্য স্বাদ আনে।
কী কী লাগবে
পটলের জন্য:
পটল – ৮-১০টি
লবণ – স্বাদমতো
Shalimar's Chef Spices হলুদ গুঁড়া – ১ চা চামচ
Shalimar's তেল – ভাজার জন্য
ছানার পুরের জন্য:
ছানা – ১ কাপ
কাজু বাদাম বাটা – ১ টেবিল চামচ
কিসমিস – ১ টেবিল চামচ
ভাজা গোটা জিরা গুঁড়া – ১/২ চা চামচ
চিনি – ১ চা চামচ
লবণ – স্বাদমতো
দোলমার গ্রেভির জন্য:
আদা বাটা – ১ টেবিল চামচ
টমেটো বাটা – ১/২ কাপ
কাঁচা লঙ্কা বাটা – ১ চা চামচ
Shalimar's Chef Spices হলুদ গুঁড়া – ১ চা চামচ
Shalimar's Chef Spices জিরা গুঁড়া – ১ চা চামচ
Shalimar's Chef Spices গরম মসলা গুঁড়া – ১/২ চা চামচ
লবণ – স্বাদমতো
চিনি – ১ চা চামচ
Shalimar's তেল – ২ টেবিল চামচ

কীভাবে বানাবেন
পটলের দুই পাশের ডগা কেটে নিন এবং খোসা অল্প চিরে নিন। ভেতরের বীজ বের করে নিন সাবধানে, যেন পটল ফেটে না যায়। পটলে সামান্য লবণ ও হলুদ গুঁড়া মাখিয়ে ২-৩ মিনিট হালকা ভেজে তুলে রাখুন। ছানা হাতে ভালো করে গুঁড়া করে নিন। এতে কাজু বাটা, কিসমিস, লবণ, চিনি ও ভাজা জিরা গুঁড়া মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি পটলের ভেতরে পুরের মতো ভরে দিন। কড়াইতে তেল গরম করে আদা বাটা, কাঁচা লঙ্কা বাটা দিন ও কষিয়ে নিন। হলুদ, জিরা গুঁড়া, টমেটো বাটা, লবণ ও চিনি দিয়ে ভালো করে কষিয়ে নিন। যখন তেল ছেড়ে আসবে, তখন এক কাপ দিন ও ফুটতে দিন। গ্রেভির মধ্যে আগে থেকে পুর ভরা পটল গুলো দিয়ে ঢেকে দিন। মাঝারি আঁচে ৫-৭ মিনিট রান্না করুন, যেন মসলা পটলের ভেতরে ঢুকে যায়। শেষে গরম মসলা ছড়িয়ে নামিয়ে নিন।

Comments