top of page
Search

পাতায় পাতায় পরমান্ন, একবারেই খান! গরম করে নয়। ব্লাড প্রেশার থেকে বাঁচতে চাইলে কী করবেন?

পাতায় পাতায় পরমান্ন

শীত এবারে হতাশ করেনি। দু'হাত খুলে উপচে দিয়েছে নিজের ঝাঁপি। আর শীতকাতুরে বাঙালির তো পোয়াবারো। আদুরে শীত গায়ে মেখে কবজি ডুবিয়ে খাওয়া দাওয়া না করলে কি আর চলে! তাই একটু রসে বশে খাবার নিয়েই এবারের সংখ্যা। দুই বাংলার অভিন্ন হৃদয়। খাবার পাতেও তাই এপার ওপারের স্বাদ হাত ধরাধরি করে থাকে। পোলাও-বিরিয়ানি রান্নার সাত-সতেরো বুনেই বিদায়ী শীতকে শেষবারের মতো ওমে মোড়া যাক না! সাথে থাকুক ইলিশ পোলাও। এই মরসুমে নিজে হাতে একটু খুন্তি না তুলে নিলে মনটা কেমন উসখুস করে। সুতরাং খোশমেজাজে লেগে পড়া যাক হেঁশেল আর জিভ সামলাতে। বিরিয়ানি পোলাও-এর মেড ইজি তো হাতে ধরা রইলই। বন অ্যাপেটিট।



দেবযানী মুখোপাধ্যায়

ইলিশ পোলাও


কী কী লাগবে

৪ পিস ইলিশ, ২ কাপ গোবিন্দ ভোগ চাল / বাসমতী চাল, ২ চামচ পেঁয়াজ পেস্ট, ২ চামচ আদা পেস্ট, ২ চামচ রসুন পেস্ট, ১ চামচ Shalimar's লাল লঙ্কা গুঁড়ো, ১ চামচ Shalimar's ধনে গুঁড়ো, ২টি বড় পেঁয়াজ চপ করা, ১ কাপ নারকেল দুধ, ১/৪ কাপ মিষ্টি দই মিক্স করা, ৫ কাপ গরম জল, ১/২ কাপ ঘি, নুন স্বাদ মতো, ১/২ কাপ Shalimar's তেল, সবুজ কাঁচা লঙ্কা।

কীভাবে বানাবেন

প্রথমে একটি বাটি নিন। এতে ১ চামচ লাল লঙ্কা গুঁড়ো, ১ চামচ ধনে গুঁড়ো, ১ চামচ নুন, ১ চামচ চিনি এবং ১ চামচ আদা-রসুন পেস্ট দিন। কিছুটা জল যোগ করুন এবং মশলা পেস্ট তৈরি করে ফেলুন। এরপর, প্যানটি গরম করতে দিয়ে তাতে ৩ চামচ সর্ষের তেল দিন। আঁচ কম করে মশলা পেস্ট যোগ করুন। মাঝারি আঁচে এটি ৩০ সেকেন্ডের জন্য সাঁতলাতে থাকুন। ১/৪ কাপ মিষ্টি দই যোগ করুন এবং মাঝারি আঁচে মিনিট রান্না করুন। এরপর, ইলিশ মাছের পিসগুলোয় মশলা মাখাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে মাঝারি আঁচে ৫ মিনিট ঢেকে রান্না হতে রাখুন। মাছটি ৩ মিনিট পরে উল্টে আবার রান্না হতে দিন। তারপর, গ্যাস ওভেনে রেখে প্যানটি ৫ মিনিটের জন্য বন্ধ করে রাখুন। ৫ মিনিট পর এটি অন্য একটি বাটিতে তুলে রেখে দিন। এরপর, একটি প্যান গরম করে এতে ১ চামচ ঘি এবং ১ চামচ তেল দিন। তারপর, গোবিন্দ ভোগ চাল দিন। ভালো করে মিশিয়ে নিন। মাঝারি আঁচে সব মিলিয়ে সাঁতলাতে থাকুন। ১ চামচ আদা-রসুন পেস্ট দিয়ে এরপর মাখো মাখো গ্রেভি বানিয়ে নিন। এটি ১ মিনিটের জন্য সাঁতলাতে থাকুন, যতক্ষণ না ভাজা ভাজা হয়। এরপর, ৫ কাপ গরম জল দিয়ে ফুটে উঠলে এতে ১/৪ চামচ নুন যোগ করুন। জল পরিমাণ মতো দেখে নেবেন যাতে বেশি না হয় এবং ভাত মাখা মাখা হয়। এরপর, মাঝারি আঁচে এটি ৫-১০ মিনিট ঢেকে রান্না করতে রাখুন। এরপর, ইলিশ-মাছগুলি যোগ করুন ৫-১০ মিনিটের জন্য আবার এটি ঢেকে রেখে রান্না হতে দিন। ১০ মিনিট পরে চাল কতটা সেদ্ধ হল পরীক্ষা করে দেখুন। এরপর, আঁচ বন্ধ করে গ্যাস ওভেনে এটি ৫-১০ মিনিটের জন্য ঢেকে রাখুন। ১০ মিনিট পরে পরিবেশন করুন গরম গরম ইলিশ পোলাও।

জ্যোতি সাপ্রু

কাশ্মীরি স্টাইলে মটন ইয়খনি পুলাও / আখনি পুলাও


কী কী লাগবে

২ কাপ বাসমতী চাল, কমপক্ষে আধ ঘণ্টা জলে ভিজিয়ে রাখুন ৫০০ গ্রাম মাটন, টুকরো টুকরো করা ১/২ পেঁয়াজ, দুই টুকরো করে কেটে নিন, ২ কালো এলাচ, ১/২ চা চামচ পুরো কালো মরিচ, ১/২ চা চামচ লবঙ্গ (লং) ২ ইঞ্চি দারুচিনি লাঠি (আলচিনি), ১ তেজপাতা, ১ চিমটি জয়ফল পাউডার, ১ জয়িত্রী, ৬ লবঙ্গ রসুন 2 ইঞ্চি আদা ১ চা চামচ ধনিয়া (ধনিয়া) বীজ, ৩ কাপ জল নূন, প্রয়োজন হিসাবে ১ পেঁয়াজ, পাতলা কাটা ১-১/২ চা চামচ আদা রসুন বাটা, ১/২ টমেটো, কাটা ১ চা চামচ জিরা বীজ, ১/২ কাপ দই, ১/২ চা চামচ Shalimar's ধনে গুঁড়ো, ১/২ চা চামচ Shalimar's লাল লঙ্কা গুঁড়ো, ১ চা চামচ Shalimar's গরম মশলা গুঁড়ো, ২টি এলাচ, ১-১/২ চা চামচ মৌরি।

কীভাবে বানাবেন

আমরা প্রথমে একটি মশলা পটলি ব্যবহার করে ইয়খনি বা স্টক তৈরি করব, একটি পরিষ্কার মসলিনের কাপড় নিন এবং তাতে পেঁয়াজ, রসুনের কুচি, আদা, কালো এলাচ কুচি, কালো গোলমরিচ, ধনে, লবঙ্গ, দারুচিনি কাঠি, জায়ফল রাখুন এবং পুঁটলি বেঁধে নিন। একটি সসপ্যানে, মাঝারি আঁচে জল যোগ করুন, এবং মটন, নুন যোগ করুন এবং এটি প্রায় ৩০ মিনিট ধরে সেদ্ধ করুন। মটন টুকরো সঙ্গে স্টক একপাশে রাখুন। 'ইয়খনি' প্রস্তুত। একটি বড় প্যানে মাঝারি আঁচে তেল গরম করুন এবং কাটা পেঁয়াজ ভাজুন। পেঁয়াজের ১/৪ নিন এবং একপাশে রেখে দিন। বাকি পেঁয়াজে জিরা, আদা রসুনের পেস্ট, টমেটো, নুন, লাল মরিচ গুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো দিয়ে ভাজুন এবং প্রায় ৩ মিনিট ভাজুন। ৩ মিনিট পর দই, গরম মশলা এবং সবুজ এলাচ দিন। টমেটো সেদ্ধ হওয়া পর্যন্ত মাঝারি আঁচে রান্না করুন। মশলাতে মৌরি এবং মটন টুকরো দিয়ে আরও ৩-৪ মিনিটের জন্য সেদ্ধ হতে দিন। এই মশলা এবং ভিজিয়ে রাখা এবং ভাজা চাল সসপ্যানে তৈরি ইয়খনিতে (স্টক) যোগ করুন, আঁচে চালিয়ে নিন এবং এতে চাল রান্না করুন প্রায় ৫ মিনিটের জন্য বা জল শুকানো পর্যন্ত। ভাতের উপর ভাজা পেঁয়াজ ছড়িয়ে দিন, এক টেবিল চামচ ঘি দিয়ে পাত্রটি বা আটা ময়দা দিয়ে সিল করুন যাতে স্বাদগুলি ইয়খনি পোলাও থেকে বেরোতে না পারে। ইয়াখনি পোলাওকে কম আঁচে ১৫ মিনিটের জন্য অথবা চাল না হওয়া পর্যন্ত রান্না করুন। ১৫ মিনিটের পরে আঁচটি বন্ধ করুন এবং গরম গরম পরিবেশন করুন।



সুদীপ্ত সেন

ব্রকোসিলাস্ত্রে পোলাও


কী কী লাগবে

বাসমতি চাল ২কাপ, ব্রকোলি ১টি (ছোট টুকরো করা), সবুজ বেল পেপার কুচি ১টি, পেঁয়াজ কুচি ১টি, কাঁচালঙ্কা কুচি ২টি, রসুন কুচি ৩-৪টি, গোটা কাজুবাদাম ৯-১০টি, ধনেপাতা ও পার্সলে পাতা কুচি ১টেবিল চামচ, Shalimar's গোলমরিচ গুঁড়ো ১ চা চামচ, সোয়া সস ১ চা চামুচ, ২ চা চামচ Shalimar's তেল ও মাখন, নুন স্বাদ মতো

কীভাবে বানাবেন

আধসেদ্ধ করা বাসমতি চালে ঘি ও সামান্য নুন মাখিয়ে রেখে দিন। এরপর একটি পাত্রে মাখন ও ঘি গরম করে তাতে পেঁয়াজ, সবুজ বেল পেপার, কাঁচালঙ্কা, রসুন কুচি ও গোটা কাজুবাদাম দিয়ে নাড়তে থাকুন নরম হয়ে আসলে। এরপর ব্রকোলি ও বাসমতি চাল দিয়ে নেড়ে মিনিট-কুড়ি ঢাকা দিয়ে রাখুন। তারপর ঢাকনা খুলে ওপর দিয়ে সামান্য সয়া সস ও গোলমরিচ গুঁড়ো দিয়ে নেড়ে ধনেপাতা ও পার্সলে পাতা দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন ব্রকোসিলাস্ত্রে পোলাও বাটার গরম করে তাতে রসুন কুচি দিয়ে, মাশরুম ভেজে নিতে হবে। সুন্দর ম্মেল আসবে তখন দিতে হবে চাটনিটা।


তনুজা আচার্য্য

বাংলাদেশী মটন তেহারি


কী কী লাগবে

খাসির মাংস ৫০০ গ্রাম, জিরা রাইস / গোবিন্দ ভোগ / বাসমতী চাল ২ কাপ, আদা, রসুন বাটা- ২ চামচ, পেঁয়াজ - ২ কুচনো, গোটা গরম মশলা লবঙ্গ-৪, এলাচ ৪, দারুচিনি- ১ ইঞ্চি, তেজ পাতা- ১, গোল মরিচ ১ চামচ, কাঁচা লঙ্কা বাটা - ১ চামচ, কাঁচা লঙ্কা-৩ চেরা, শাহ জিরা- ১ চামচ, Shalimar's ধনে গুড়ো ১ চামচ, টক দই- ৩ চামচ, চিনি- ২ চামচ বা স্বাদ অনুযায়ী, ভাজা পেঁয়াজ কড়া চামচ, Shalimar's সর্ষের তেল প্রয়োজন অনুযায়ী, কেওরা জল ১ চা চামচ, গরম দুধ- ১ কাপ / প্রয়োজন অনুযায়ী, Shalimar's গরম মশলা গুঁড়ো-১ চামচ, আদা বাটা- ১ চামচ, নুন- স্বাদ মতো

কীভাবে বানাবেন

খাসির মাংস ম্যারিনেট করুন নুন, শাহ জিরা, ধনে গুঁড়ো, কাঁচা লঙ্কা বাটা, আদা রসুন বাটা- ২ চামচ, টক দই ৩ চামচ সাথে চিনি মিশিয়ে ভালো করে মাখিয়ে নিন আর ৩০ মিনিট রেখে দিন। এবার কড়াইতে সর্ষের তেল গরম করুন, তাতে গোটা গরম মশলা ফোঁড়ন দিন, যাতে গরম মশলার গন্ধ ভালো করে মিশে যায়, এবারে ২টো পেঁয়াজ সরু সরু করে কেটে ভালো করে ভাজুন, এবার তাতে মাংস দিয়ে ভালো করে কষতে থাকুন। মাংসতে দই আছে বলে অল্প গরম জল দিন যাতে ভালো করে মাংস গলে, কিছুক্ষণ কড়া আঁচে রান্না করুন, এবারে গোল মরিচ আর নুন দিয়ে অল্প আঁচে থেকে রান্না করুন যতক্ষণ না মাংস নরম হচ্ছে। প্রয়োজন মতো জল দিতে পারেন। মাংস সেদ্ধ হয়ে এলে তাতে গরম মশলা গুঁড়ো আর কেওরা জল দিন, আর ভালো করে নেড়ে নিলেই মটন তৈরি।

তেহারি ভাত তৈরি করতে লাগবে

প্রথমে চাল ধুয়ে জল ঝরিয়ে রাখবেন। গরম তেলে একটা পেঁয়াজ স্লাইস করে ভেজে নিতে হবে, এতে দেবেন গরম মশলা, আর ধুয়ে রাখা চালটা দিয়ে ভালো করে ভাজতে হবে, এবার দিন ১ চামচ আদা বাটা, শাহ জিরা আর নুন মিষ্টি দিয়ে ভালো করে চালে মিশিয়ে নিতে হবে, এবার এতে দিন পরিমান মতো জল চাল সেদ্ধ করার জন্য আর দেবেন কেওরা জল, কিছুক্ষণ সেদ্ধ করুন। এবার ভাতে দিন গরম দুধ ১ কাপ আর আধ সেদ্ধ করুন চাল টা। বেশি করবেন না। এবার এই আধ সেদ্ধ চালে রান্না করা মটন, সাথে ৩-৪ টে কাঁচা লঙ্কা উপর দিয়ে ছড়িয়ে দিন। এবার ভালো করে চালের সাথে মাংসটা মেশান। ওপরে ভাজা পেঁয়াজ ছড়িয়ে দিন। দমে বসান ১৫ মিনিট। মাঝে একটু দেখে নেবেন চাল সেদ্ধ হলেই তৈরি বাংলাদেশী মটন তেহারি।


সুপ্রিয় জানা

টেংরি বিরিয়ানি


কী কী লাগবে

বাসমতী চাল, আদা-রসুন, কাঁচা লঙ্কা, পেঁয়াজ, টক দই, Shalimar's কাশ্মীরি লাল লঙ্কা গুঁড়ো, বিরিয়ানি মশলা পাউডার, Shalimar's গরম মশলা পাউডার, Shalimar's রিফাইন্ড তেল, ঘি, টমেটো লাল রঙ, দুধ, কেসর, নুন স্বাদ মতো, চিকেন ড্রামস্টিক, কেওড়া জল, মিষ্টি আতর, তন্দুরি মশলা, লেবু রস।

কীভাবে বানাবেন

ড্রামস্টিকগুলি ধুয়ে পরিষ্কার করুন, তারপরে আদা রসুন এবং বিট লবণের সাথে লেবুর রস দিয়ে মেরিনেট করুন। এটি ১৫ মিনিটের জন্য একপাশে রেখে দিন। তারপরে তন্দুরি মশলা, লাল লঙ্কা গুঁড়ো, নুন, কাঁচা লঙ্কা পেস্ট, আদা রসুনের পেস্ট, ডিমটি খাবারের গ্রেডযুক্ত লাল রঙ মেশান এবং ড্রামস্টিকের সাথে ঘষুন, আরও ৩০ মিনিট রাখুন। বাসমতী চাল ধুয়ে কমপক্ষে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। এর মধ্যে ভাজা পেঁয়াজ তৈরি করে নিন। ৪৫ মিনিটের পরে একটি স্কিললেট নিন, ঘি দিয়ে গ্রিজ দিন এবং আঁচে বাদামী হওয়া পর্যন্ত ভাজুন। এরপর, দই গোলাপ জল, কেওড়া জল, ১ ফোঁটা ইত্তার, বিরিয়ানি মশলা, লবণ, কাশ্মিরী লঙ্কা গুঁড়ো, ২ চা চামচ তেল এবং ১ ফোঁটা লাল রঙের সাথে মিশিয়ে নিন। একটি কড়াই নিন, ড্রামস্টিকের সাথে এই মিশ্রণটি ১৫ মিনিটের জন্য ফোটানোর জন্য যোগ করুন। স্টক একপাশে রাখুন। চাল সেদ্ধ করতে একটি ডেকচি নিন। কয়েকটা গরম গরম মশলা, নুন জলে রেখে দিন। ফুটন্ত পয়েন্টে জল আসার পরে ভেজানো বাসমতী চাল দিন। চাল যখন ৭০%-৮০% রান্না করা হয় তখন জলটি ফেলে দিন। একটি হ্যান্ডি নিন, ঘি দিয়ে হ্যান্ডির নীচের অংশটি গ্রিজ করুন। ২ টেবিল চামচ মুরগির স্টক যুক্ত করুন, নীচে ৪ পিস ড্রামস্টিক দিন। এবার উপরে সেদ্ধ চাল দিন। চালের উপরে বিরিয়ানি মশলা ছিটিয়ে তাজা পুদিনা, ২টি তাজা সবুজ চিল, ভাজা পেঁয়াজ দিন। হালকা গরম দুধে ভিজিয়ে রাখুন। চালের উপরে জাফরান দুধ ছিটিয়ে দিন। অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল দিয়ে হ্যান্ডি বন্ধ করে খুব কম আঁচে ১৫ মিনিটের জন্য রান্না হতে রাখুন। টাটকা পুদিনা দিয়ে বিরিয়ানি পরিবেশন করুন এবং কাটা সবুজ লঙ্কার গার্নিশিং করে।

নাজিয়া ফারহানা

(বাংলাদেশ)

মোরগ পোলাও


কী কী লাগবে

মোরগ মাঝারি ১ টি, পেঁয়াজ বেরেস্তা ১/২ কাপ, টক দই ১/২ কাপ, পেঁয়াজ বাটা ৪ টেবিল চামচ, আদা বাটা ২ টেবিল

চামচ, রসুন বাটা ২ চা চামচ, কাঁচা লঙ্কা বাটা ১টি, কাজু বাদাম বাটা ১০টি, দারচিনি ২ টুকরো, এলাচ ৪টি, লবঙ্গ ৫টি, তেজপাতা ২টি একসাথে গুঁড়ো করে নেওয়া জায়ফল গুঁড় ১/২ চা চামচ জয়িত্রী গুঁড়ো, ১/৪ চা চামচ Shalimar's গোলমরিচ গুঁড়ো, ১/২ চা চামচ নুন পরিমাণ মতো লেবুর রস, ১/২ চা চামচ চিনি ১ চা চামচ কিসমিস ৭-৮ টি আলুবোখরা ৫-৬ টি, Shalimar's তেল ১/৪ কাপ


পোলাও-র জন্য

পোলাও চাল ২ ১/২ কাপ এলাচ ২ টি, দারচিনি ২ টুকরা, তেজপাতা ১ টি পেঁয়াজ কুচি ১/২ কাপ

আদা বাটা ১ টেবিল চামচ লবন পরিমাণ মতো গরম জল ৪ ১/৪ কাপ বা পরিমাণ বুঝে কেওড়া জল ১ টেবিল চামচ গুঁড়ো দুধ ৪ টেবিল চামচ আস্ত কাঁচা লঙ্কা ৪/৫ টি ঘি ১/৩ কাপ

কীভাবে বানাবেন

মোরগ ৬ টুকরো করে নিন। এরপর সব ভাল করে ধুয়ে টুকরোগুলোর পায়ে ছুরি দিয়ে হালকা চিরে দিন। মাংসের সাথে ২ টেবিল চামচ টক দই এবং সামান্য লবন মেখে আধা ঘণ্টা মেরিনেট করে রেখে এরপর তেলে ভেজে আলাদা প্লেটে তুলে রাখুন। এখন ঐ তেলে একে একে আদা বাটা, রসুন বাটা, পেঁয়াজ বাটা, ফেটানো টক দই, পেঁয়াজ বেরেস্তা, কাঁচা লঙ্কা বাটা, বাদাম বাটা, লবন এবং শুকনো সব গুঁড়ো মশলা দিয়ে সব ভাল করে কষিয়ে নিন। মশলা কষানোর সময় অল্প অল্প গরম জল দিন। মশলা কষাতে কষাতে মশলার উপর তেল উঠে এলে ভেজে রাখা মাংস এর মধ্যে দিয়ে দিন। মশলার সাথে মোরগের টুকরো ভাল করে মিশিয়ে আবার একটু কষিয়ে নিন। সামান্য জল দিন। আঁচ মাঝারি করে পাত্র ঢেকে দিন ১৫ মিনিটের জন্য যাতে মাংসের ভিতরে ভাল করে মশলা ঢুকে যায়। খেয়াল রাখবেন মশলা যাতে পাত্রের নিচে না লেগে যায়। মাঝে মাঝে সাবধানে সব নেড়ে দিন। গ্রেভিটা মাখা মাখা হয়ে তেল উপরে উঠে এলে এতে চিনি, লেবুর রস, কিসমিস এবং আলুবোখরা দিয়ে গ্যাস বন্ধ করে পাত্র ঢেকে রেখে দিন। এবার আলাদা পাত্রে পোলাও তৈরি করে নিন। পোলাও তৈরির আগে চাল ৩০ মিনিট জলে ভিজিয়ে রেখে এরপর চাল থেকে জল ঝরিয়ে নিন। এবার পাত্রে ঘি গরম দিন। আস্ত গরম মশলা এবং পেঁয়াজ দিন। পেঁয়াজ একটু ভেজে পোলাও চাল দিয়ে দিন। আঁচ মাঝারি রাখুন। পোলাও চাল ঘিতে ২-৩ মিনিট ঘন ঘন নেড়ে ভেজে নিয়ে এর মধ্যে আদা বাটা এবং লবন দিন। এরপর পরিমাণ মতো গরম জল এবং গুঁড়ো দুধ দিয়ে সব একসাথে নেড়ে দিন। জল ভালোভাবে ফুটে জল কমে আসা শুরু হলে পাত্রের ঢাকনা দিয়ে দিন। এবার আঁচ একেবারে কমিয়ে পোলাও দমে দিয়ে রাখুন ২০ মিনিটের জন্য। ২০ মিনিট হয়ে গেলে অর্ধেক পোলাও তুলে এর উপর রান্না করা মাংস পুরোটা ঢেলে বিছিয়ে দিন। এরপর তুলে রাখা বাকি পোলাও দিয়ে মাংস ঢেকে দিন। এখন পোলাওর উপর কেওড়া জল, ১ চা চামচ ঘি এবং আস্ত কাঁচা লঙ্কা ছড়িয়ে পাত্র ঢেকে দিয়ে গ্যাস বন্ধ করে দিন। পরিবেশনের আগে আর পাত্রের ঢাকনা খুলবেন না। একবারে পরিবেশনের সময় পাত্রের ঢাকনা খুলুন।

 

একবারেই খান। গরম করে নয়...

জানেন কি কিছু খাবার গরম করে খেলে আপনার শরীরের নানা ক্ষতি হতে পারে। হতে পারে মৃত্যু পর্যন্ত। আলোচনায় টিম অনন্যা।


সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের লাইফ স্টাইলের পরিবর্তন ঘটে। কখনও তা ইচ্ছে অনুযায়ী, কখনও বা কাজের তাগিদে। নিউক্লিয়ার ফ্যমিলি। কর্তা-গিন্নি দুজনেই ব্যস্ত চাকরি জীবনে। একটি সন্তান বা দুটি, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বোর্ডিং বা রক্ষকের কাছেই থাকে। মডিউলার কিচেন ঝকঝকে তকতকে। কারণ সেখানে প্রায় প্রতিদিন প্রয়োজনীয় রান্নার জন্য যে ব্যবহার দরকার তা হয়ে ওঠে না। একটা বড় করে রান্না করে সেটা সপ্তাহ ভর খাওয়া, এটা শহুরে নাগরিক সংস্কৃতির রীতি প্রায়। তাই সেই খাবার বার বার গরম করে খেতে হয়। আবার গরম খাবার অনেকেরই পছন্দ। রোজকার জীবনে সময় বাঁচানোর জন্য রান্না করে ফ্রিজে রেখে দেওয়া পরে সেই খাবার গরম করে খাওয়া- এটা কতটা উপকার, কতটা নয়, আমরা অনেকেই জানি না। যেমন ফ্রিজে রাখা যেকোনও খাবার পরের দিন খেলে ফ্রিজ থেকে একবারে বের করতে নেই। যতটুকু খাবেন, ঠিক ততটুকুই বের করবেন। তবে কি জানেন, কিছু খাওয়ার বারবার গরম করে খেলে আসতে পারে ঘোর বিপদ? এতে যেমন কমে পুষ্টিগুণ তেমন বেড়ে যায় রোগের ঝুঁকি।


চিকিৎসকেরা বলছেন, সবসময় টাটকা খাবার খাওয়াই উচিৎ! তাও একান্তই যদি ভাত গরম করে খেতে হয়, সর্বোচ্চ একবার গরম করাই ভালো। এর বেশি গরম করলে, ভাত নষ্ট হয়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। তেমনি আজ আপনাদের কাছে এমন কিছু খাবারের কথা বলব, যেগুলো কখনও কোনওদিন গরম করে খাবেন না।

ভাত

ভাত রান্না করার সময় তাতে বেসিলস সিরিয়াস ব্যাক্টেরিয়া তৈরি হয়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সুকুমার মুখোপাধ্যায়

জানিয়েছেন, সুষম খাবারের অঙ্গ হিসেবে অল্প করে ভাত খেলে, সে আপনি যদি ফ্যানযুক্ত ভাতও খান, ওজন বাড়ে না, বরং উচ্চ রক্তচাপ, মেটাবলিক সিনড্রোম (হৃদরোগের অন্যতম কারণ) ও কোমরের মাপ বাড়ার আশঙ্কা কমে যথাক্রমে ৩৪, ২১ ও ২৭ শতাংশ। কমে কিছু ক্যানসারের আশঙ্কাও। কাজেই সারা দিনে ১৫০ গ্রামের মতো ভাত খেতেই পারেন। এতে ৫০০ ক্যালোরির বেশি ঢোকে না শরীরে। ভাতের ভক্ত হলে, রুটি খেয়ে অতৃপ্ত থাকার বা পেটের গোলমালে ভোগার দরকার নেই। দিনে একবার কি দু-বার ভাতই খান।



কিন্তু রান্না করা ভাত ফের গরম করলে এই ব্যাক্টেরিয়া সংখ্যায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়ে ডায়েরিয়া পর্যন্ত হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ব্যাকটেরিয়া চাল সেদ্ধ করে ভাত তৈরি হয়ে যাওয়ার পরও বেঁচে থাকে। ভাত ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রেখে দিলে এই ব্যাকটিরিয়ার বংশ বিস্তার করে। শুরু হয় বিষক্রিয়া। আবার ভাত ৫ থেকে ৫৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায়ফের গরম করা হলে এই ব্যাকটেরিয়া সক্রিয় হয়ে ওঠে। ভাতে রয়েছে স্টার্চ, শরীরকে শক্তি জোগাতে যার বিরাট ভূমিকা। আছে ফাইবার, পেটের সমস্যা কমাতে, ওজন-সুগার-রক্তচাপ বশে রাখতে যার ভূমিকা আছে। ভাত সহজে হজম হয়। ফলে জ্বর, পেটের গোলমাল বা অন্য অসুখ-বিসুখের মধ্যেও খেতে পারেন। ডায়াবেটিসেও সে ব্রাত্য নয়। ফাইবারসমৃদ্ধ শাক-সবজি-স্যালাড, ডাল, মাছ ইত্যাদি থাকলে এক-আধ কাপ ভাত খাওয়া যেতে পারে। ভাত খেলে সেরেটোনিন নামে হরমোনের ক্ষরণ বাড়ে বলে অল্প খেলেও শরীর-মন তৃপ্ত থাকে। ভুলভাল খাবারের প্রতি আকাবনা কম জাগে। ভাতে রয়েছে প্রোটিন ও বিভিন্ন ভিটামিন- মিনারেল। এত উপকার পেতে গেলে ভাত রান্না করতে হয় সঠিকভাবে। এবং খেতেও হবে সঠিকভাবেই।

ডিম

ডিম যদি দ্বিতীয়বার গরম করা হয় তাহলে এর পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়। চীনে প্রায় ৫ লাখ লোকের ওপর এক গবেষণা চালিয়ে বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রতিদিন একটা করে ডিম খেলে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডিম থেকে শারীরিক উপকার পেতে হলে স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন করতে হবে। ইংল্যাণ্ডে কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিটা ফরুহি জানাচ্ছেন, পুষ্টি সংক্রান্ত নান্য গবেষণায় অনেক সময়ই কিছু না কিছু ফাঁক থেকে যায়, কিন্তু চীনে বড় এই সমীক্ষার ওপর ভিত্তি করে চালানো গবেষণা থেকে অন্তত একটা বিষয় পরিষ্কার যে প্রতিদিন একটা ডিম খেলে তার থেকে হৃদযন্ত্র বা শরীরের রক্ত সঞ্চালনে কোন ঝুঁকি তৈরি হয়না। বরং প্রতিদিন একটা ডিম স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে। বলছেন বিজ্ঞানীরাও। ডিমে আছে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন, ভিটামিন এ, ডি, বি এবং বি-টুয়েলড়। এছাড়াও ডিমে আছে লুটেইন ও যিয়াস্যানখিন নাম দুটি প্রয়োজনীয় উপাদান যা বৃদ্ধ বয়সে চোখের ক্ষতি ঠেকাতে সাহায্য করে।

ব্রিটিশ ডায়েটিক অ্যাসোসিয়েশনের ড: ফ্র্যাঙ্কি ফিলিপস বলছেন, 'দিনে একটা এমনকি দুটো ডিমও স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। তবে একটা কথা বিশেষভাবে বলা প্রয়োজন, নিয়ম মেনে ডিম খেতে হবে। যেদিন যে ডিম খাবেন, সেদিন তার রান্না করা আবশ্যক। একেবারে করে রাখা রান্না করা ডিম পরের দিন গরম করলে ডিমের মধ্যে নানা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া জন্মে। এসব ব্যাকটেরিয়া পেটের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এছাড়া ডিম দ্বিতীয়বার। গরম করলে এরমধ্যে থাকা নাইট্রোজেন অক্সিডাইজড হয় যা ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। ডিমের সব রকমের উপকারিতাও নষ্ট হয়। একারণে পুষ্টিবিদদের মতে, ডিম রান্না কিংবা ভাজা যেভাবেই খান না কেন, কোনোটাই দ্বিতীয়বার গরম করে খাওয়া ঠিক নয়।

মুরগির মাংস

আমাদের মধ্যে অনেকেই সময় বাঁচানোর জন্য একবারেই অনের মুরগির মাংস রান্না করে রাখি। কিন্তু মুরগির মাংস বারবার গরম করে খাওয়া একেবারেই উচিত নয়। খাসির মাংসের থেকে সস্তা মাংস ত্বক ও শরীরের জন্য স্বাস্থ্যকর উপাদানে ভরপুর। মুরগির মাংস ওজন কমাতে সাহায্য করে, হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। পাশাপাশি এতে রয়েছে আরও নানা রকম পুষ্টিগুণ। মুরগির মাংসে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে। যা পেশীকে শক্তিশালী করতে ভূমিকা রাখে। কম চর্বিযুক্ত প্রোটিন হওয়ায় এটি ওজন কমানোর ভালো উৎস। পেট ভরা রেখেও দীর্ঘদিন ওজন কমিয়ে রাখতে চাইলে মুরগির মাংস নিঃসন্দেহে স্বাস্থ্যকর খাবার। মুরগির মাংসে উচ্চ মাত্রায় ট্রাইফটোফ্যান নামে অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে। ফলে এক বাটি চিকেন স্যুপ স্বস্তি এনে দিতে পারে। বিষন্নবোধ হলে কয়েকটি চিকেন উইংস খাওয়া যেতে। পারে। যা মস্তিষ্কে সেরেটোনিনের মাত্রা বাড়িয়ে চাপমুক্ত থাকতে সাহায্য করে। হাড়ের ক্ষয় প্রতিরোধ করে। বয়স্কদের আথ্রাইটিস ও হাড় সংক্রান্ত অন্য রোগের আশঙ্কা বেশি থাকে। কিন্তু ভয়ের কিছু নেই। প্রতিদিন মুরগির মাংস খাবার তালিকায় রাখলে এর প্রোটিন হাড়ের ক্ষয় প্রতিরোধ করবে। হার্টের জন্য ভালো।মুরগির মাংস হোমোকিস্টাইনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রেখে হার্টের বিভিন্ন ধরনের কার্ডিওভাস্কুলার রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে। হোমোকিস্টাইন একটি অ্যামিনো অ্যাসিড। উচ্চমাত্রায় এটি হার্টের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।


মুরগির মাংস ফসফরাস সমৃদ্ধ হওয়ায় দাঁত ও হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এছাড়া ফসফরাস কিডনি, লিভার ও স্নায়ুতন্ত্রের নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। হজমে সাহায্য করে। মুরগির মাংসের ভিটামিন ও শরীরে বিপাকের মাত্রা উন্নত করে। শরীরে চর্বি না বাড়িয়েই খাবার হজম করতে পারে। রক্তনালী ঠিক রাখতেও এটি কাজ করে। শরীরকে ক্যান্সারমুক্ত রাখতে নিয়াসিন একটি প্রয়োজনীয় ভিটামিন। মুরগির মাংসে প্রচুর পরিমাণে নিয়াসিন থাকে, যা বিভিন্ন রকমের ক্যান্সার ও ত্রুটিপূর্ণ ডিএনএ দ্বারা যেসব জিনগত সমস্যা তৈরি হয় তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। চোখ ভালো রাখে। অন্য খাবারগুলোর মতো মুরগির মাংসও চোখের সুরক্ষায় কাজ করে। মুরগির মাংসে রেটিনাল, আলফা ও বিটা ক্যারোটিন, লাইকোপেন থাকে, যার সবগুলোই ভিটামিন 'এ' তে পাওয়া যায়। চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এগুলো জরুরি উপাদান। কারণ মুরগির মাংসে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে। রান্নার পরে ফের তা গরম করলে প্রোটিনের কম্পোজিশন বদলে গিয়ে তা থেকে বদহজম হতে পারে। সঙ্গে মুরগির এই পুষ্টি গুন নষ্ট হয়ে যায়। ফলে শরীর খারাপ হতে পারে। এমনকি বাড়াবাড়িতে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

চা

এটা আমাদের অনেকেরই জানা যে একবার চা বানানোর পর তা ঠাণ্ডা হয়ে গেলে পুনরায় গরম করা উচিত নয়। কারণ চায়ের মধ্যে ট্যানিক অ্যাসিড থাকে। স্বাস্থ্য রক্ষায় চা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পুষ্টিগুণ সামান্য হলেও এতে রয়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। যেমন পলিফেনলস, ফ্ল্যাভোনয়েডস এবং ক্যাটেচিন। পলিফেনলস এবং ক্যাটেচিন ফ্রি রেডিক্যালস তৈরিতে বাধা দেয় এবং কোষের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়াকে বাধাগ্রস্ত করে। একারণে চা ক্যান্সার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চায়ে উপস্থিত পলিফেনলসের পরিমাণ ২৫% এরও বেশি যা দেহের অভ্যন্তরে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।


চায়ে ৭% থিওফাইলিন ও থিওব্রোমিন রয়েছে যা শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানির জন্য অনেক উপকারী। চা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হলেও এতে রয়েছে ক্যাফেইন নামক উত্তেজক পদার্থ। সাধারণত এক কাপ চায়ে রয়েছে (৩০-৪০) মিলিগ্রাম ক্যাফেইন। বস্তুত ক্যাফেইনের কারনেই ঘুম কম হওয়া, হজমে ব্যঘাত ঘটা ইত্যাদি সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। তবে এই ক্যাফেইনের কিছু ভালো দিকও রয়েছে। এটি হৃদপিণ্ড ও দেহের অন্যান্য পেশি সতেজ রাখতে সহায়তা করে। যেহেতু চা আমাদের প্রতিদিনের ব্যস্ত জীবনের নিত্যসঙ্গী, সেহেতু এই চা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এবং কিছু ক্ষেত্রে তা ক্ষতিও করে। তৈরি করা চা ফের গরম করে খেলে লিভারের ক্ষতি হতে পারে।

আলুর তরকারি

পুষ্টিগুণে ভরপুর এই খাদ্যটি যদি বারেবারে গরম করে খাওয়া হয়, তাহলে এতে উপস্থিত শরীরের উপকারী উপাদানগুলির কর্মক্ষমতা কমে যেতে শুরু করে। আমাদের খাদ্য তালিকায় আলু যেন প্রতিদিনের সঙ্গী। আলু ছাড়া মনে হয় কোনও তরকারি রায় হয় না। অধিকাংশ তরকারি রান্নাতে আলু ব্যবহার হয়। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় আলু একটি খুব সাধারণ ও প্রয়োজনীয় সবজি। আলুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে মিনারেল, ফাইবার, ও ভিটামিন যা আমাদের শরীরকে সুস্বাস্থ্য দেয় ও বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। তবে অনেকেই কম কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার খাওয়ার জন্য আলু খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছেন, কিন্তু বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে আলু খাওয়ার নানারকম উপকারিতা রয়েছে। ফলে নিয়মিত কম পরিমাণে আলু খেলে আপনি বিভিন্ন ধরণের উপকার পাবেন। আলুতে আছে ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক, আয়রনও ক্যালসিয়াম, এই সবকটি উপাদান হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্যে উপকারি। শরীরের গঠনে আলু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া আলুতে রয়েছে ফসফরাস যা অস্টিওপরোসিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্যে কম সোডিয়ামযুক্ত খাবার আমাদের খাওয়া প্রয়োজন। কিন্তু এর সঙ্গে প্রয়োজন বেশি পরিমাণে পটাসিয়াম গ্রহন করা। এই দুটি জিনিসই সঠিক পরিমাণে আছে আলুতে যা রক্তচাপ সহজেই নিয়ন্ত্রণ করে। আলুতে আছে পর্যাপ্ত পটাসিয়াম, ফাইবার, ভিটামিন সি ও ভিটামিন বি ৬। আর এই ভিটামিন জন্য কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়। কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণ হলে আমাদের হার্টও সুস্থ থাকে। আলুতে আছে ফোলেট যা ডি.এন.এ. তৈরি ও মেরামত করতে সাহায্য করে থাকে। ফলে যেসব কোষগুলি ক্যান্সারের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে, সেগুলি নষ্ট হয়ে যায়। তাছাড়া আলুতে থাকা ফাইবার কোলন ক্যান্সার মুক্ত করতে সাহায্য করে।

আমাদের শরীরে সঠিক পরিমাণে ফাইবার প্রবেশ করলে হজম করার ক্ষমতা বাড়ে ও পাচনতন্ত্র সঠিককভাবে চলতে থাকে। আলুতে বিদ্যমান ভিটামিন সি দাঁত ও মাড়ির সমস্যার ক্ষেত্রে বেশ উপকারি। এছাড়া এক টুকরো আলু দিয়ে রোজ দাঁত পরিষ্কার করলে দাঁতের নানা সমস্যা থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া সম্ভব। পেটের নানারকম সমস্যা যেমন ডায়রিয়া, ডিসেন্ট্রি বা হজম সমস্যা দেখা গেলে আলু সেদ্ধ করে খেলে খানিকটা উপকার পাওয়া যায়। আলুতে যে পরিমাণ ফাইবার ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে তা শরীরের ইলেক্ট্রোলাইসিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে থাকে। আমাদের হাত, পা বা শরীরের কোনও অংশ ফুলে যাওয়া থেকে অনায়াসে মুক্তি পাওয়া যায়। মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্যে কার্বোহাইড্রেট, পটাসিয়াম ও গ্লুকোজ খুব জরুরি। এই উপাদান গুলো একসঙ্গে আলুতে থাকার ফলে মস্তিষ্ক স্বাস্থ্যকর রাখতেও সাহায্য করে। ওজন সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় অল্প পরিমাণ আলু রাখা উচিত। আলুতে অতি কম পরিমাণে ফ্যাট থাকে যার ফলে পেট ভরা সত্ত্বেও ওজন বেশি বৃদ্ধি পায়না। আলুতে থাকা ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, মিনারেল ও পটাসিয়াম কোলেস্টোরল নিয়ন্ত্রণ রাখতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এর ফলে আমদের হার্ট সুস্থ থাকে। আমরা যদি এই আলুর তরকারি আবার বা বারবার গরম করে খাই তাহলে শরীরের কোনও উপকারেই লাগে না। শুধু তাই নয়, একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে বারবার গরম করে আলু দিয়ে বানানো কোনও তরকারি খেলে পেট খারাপ হওয়ার সম্ভবনা বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে ফুড পয়জনিং হওয়ার আশঙ্কাও থাকে।

পালংশাক

একাধিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে পালংশাককে গরম করে খেলে শরীরে কার্সিনোজেনিক এলিমেন্ট বা ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদানের পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। আপনারা জানেন, পালং শাকে রয়েছে মিনারেল, ভিটামিন, ফাইটো নিউট্রিয়েন্টস থেকে শুরু করে পিগমেন্টস। তাই পালংশাককে একরকম 'সুপার ফুড' বলা যায়। ত্বকের সুরক্ষা বিভিন্ন ফাইটোনিউট্রিয়েন্স ও পিগমেন্টের উপস্থিতি ত্বককে ক্ষতিকর

ইউভি রশ্মির হাত থেকে সুরক্ষা দেয় এবং ত্বকের ক্যানসারের প্রতিরোধ হিসেবেও কাজ করে। জাপানের গবেষকদের দাবি, পালংশাকের ফ্ল্যাভনয়েড নারীদের শরীরে ওষুধের কাজ করে। নিয়মিত পালংশাক খেলে গর্ভাশয়ে ক্যানসারের আশঙ্কা প্রায় ৪০ শতাংশ কমে যায়। এ ছাড়া পালংশাকে থাকা ক্যারটিনয়েড, নিওজ্যানথিন প্রস্টেট ক্যানসারের কোষকে মেরে ফেলতে সক্ষম।

পালংশাকে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, যা চোখের ভেতর ও বাইরের অংশে পুষ্টি জোগায়। এটি অকাল অন্ধত্ব থেকে চোখকে রক্ষা করে। এতে প্রচুর পরিমাণ আয়রনও আছে। এই শাক মাতৃত্বকালীন ডায়াবেটিস থেকে শরীরকে রক্ষা করে। এমনকি গর্ভস্থ শিশুর মেধা বিকাশেও পালংশাকের গুরুত্ব অপরিসীম। ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখতে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা নেয় পালংশাক। উচ্চ পরিমাণে পটাশিয়াম ও অত্যন্ত সামান্য পরিমাণ সোডিয়াম আছে পালংশাকে। এ ছাড়া উপস্থিত ফোলেট হাইপারটেনশন কমায় ও রক্ত জালিকাকে রিল্যাক্স করে। পালংশাকে থাকা আলফা লিপোয়িক অ্যাসিড নামের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে ও শরীরে ইনসুলিন সেনসিটিভিটি বাড়ায়। অ্যাজমা প্রতিরোধে সাহায্য করে। এর মধ্যে আছে বিটা ক্যারোটিন। ফাইবার এবং প্রচুর পরিমাণে জল আছে পালংশাকে। ফলে পালংশাক কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে এবং ডাইজেস্টিভ ট্র্যাককে সুস্থ রাখে। পালংশাকে ভিটামিন কে থাকে। মজবুত হাড়ের গঠনের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উপাদান ভিটামিন কে। যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন কে আমাদের খাদ্য তালিকায় থাকলে তা ক্যালসিয়াম সংগ্রহে সাহায্য করে ও মূত্রের মাধ্যমেক্যালসিয়ামের অতিরিক্ত বেরিয়ে যাওয়া আটকায়। পালংশাকে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন বি১, বি২, বি৩, ও বি৬ রয়েছে। এগুলো চুল পড়া রোধ করার পাশাপাশি ত্বকের উজ্জ্বলতাও বৃদ্ধি করে। পালংশাকে থাকা ফ্ল‍্যাভনয়েড অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। যা মস্তিষ্ককে সতেজ রাখে। এটি মস্তিষ্কের বয়স কমানোর পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে মস্তিষ্কের শক্তি অটুট রেখে অনেক বেশি বয়স পর্যন্ত স্নায়ুতন্ত্রকে নির্ভুলভাবে কাজ করতে। সাহায্য করে। এ শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন 'ই'। দৈনিক গড়ে ৩০ গ্রাম পালংশাক খেলে অ্যালঝাইমার্স রোগ হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়। আসলে পালংশাকে উপস্থিত নাইট্রেট গরম করার পর নাইট্রাইটস-এ রূপান্তরিত হয়ে যায়। আর এই উপাদানটি শরীরের পক্ষে একেবারেই ভাল নয়। তাইতো পালংশাক রান্না করার সঙ্গে সঙ্গে খেয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিত্সকেরা। না হলে এই গুণগুলোর কোনও সুফলই আপনি পাবেন না।

মাশরুম

সাধারণত মাশরুমের ফাইবার ও এনজাইম হজমে সহায়তা করে। এটি অস্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার কাজ

বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং কোলন-এর পুষ্টি উপাদান শোষণকেও বাড়াতে সাহায্য করে। মাশরুমের পুষ্টিমান তুলনামূলকভাবে অত্যধিক এবং এর প্রোটিন অতি উন্নতমানের এবং মানব দেহের জন্য অতিশয় উপকারী। একটি পরিপূর্ণ প্রোটিনের পূর্বশর্ত হলো মানব দেহের অত্যাবশ্যকীয় ৯টি অ্যাসিডের উপস্থিতি। মাশরুমে অতীব প্রয়োজনীয় ৯ টি অ্যামাইনো অ্যাসিড বিদামান। অন্যানা প্রাণিজ আমিস যেমন মাছ, মাংস, ডিম অতি নামি-দানি খাবার হলেও এতে চর্বি সম্পৃক্ত অবস্থায় থাকায় যা অতি মাত্রায় গ্রহণ করলে শরীরে কোলেস্টেরল বৃদ্ধি পেয়ে বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি করে, যার ফলে মেদ-ভুঁড়ির সৃষ্টি, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ প্রভৃতি জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। মাশরুমের প্রোটিনে-ফ্যাট এবং কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ অতি স্বল্প এবং কোলেস্টেরল ভাঙার উপাদান-লোভস্ট্রাটিন, অ্যান্টাডেনিন, ইরিটাডেনিন ও নায়াসিন থাকায় শরীরের কোলেস্টেরলস জমতে পারে না বরং মাশরুম খেলে শরীরে বহু দিনের জমানো কোলেস্টেরল ধীরে ধীরে বিনষ্ট হয়ে যায়। ১০০ গ্রাম শুকনো মাশরুমে ২৫- ৩৫ গ্রাম প্রোটিন রয়েছে। পক্ষান্তরে আমরা যা অতি নামি-দামি খাবার হিসেবে মাছ, মাংস, ডিম খেয়ে থাকি তার মধ্যে ১০০ গ্রাম মাছ, মাংস ও ডিমে প্রোটিনের পরিমাণ হলো যথাক্রমে ১৬-২২ গ্রাম, ২২-২৫ গ্রাম ও ১৩ গ্রাম মাত্র।

মাশরুমে পলিফেনল ও সেলেনিয়াম নামের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। এতে মানুষের শরীরের জন্য অত্যাবশ্যকীয় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সালফারও থাকে। এ অত্যাবশ্যকীয় অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো মারাত্মক কিছু রোগ, যেমন-স্ট্রোক, স্নায়ুতন্ত্রের রোগ এবং ক্যান্সার থেকে শরীরকে রক্ষা করে। এটি মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। নিয়মিত মাশরুম খেলে ব্রেস্ট ক্যান্সার ও প্রোস্টেট ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে। মাশরুমের ফাইটোকেমিক্যাল টিউমারের বৃদ্ধিতে বাঁধার সৃষ্টি করে। মাশরুমের ভিটামিন বি স্নায়ুর জন্য উপকারী এবং বয়সজনিত রোগ যেমন- অ্যালঝাইমার্স রোগ থেকে রক্ষা করে। মাশরুম খেলে রক্তে চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে। মাশরুমে এনজাইম ও প্রাকৃতিক ইনসুলিন থাকে, যা চিনিকে ভাঙতে পারে। এতে থাকা ফাইবার ও এনজাইম হজমে সহায়তা করে। এটি অস্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার কাজ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং কোলনের পুষ্টি উপাদান শোষণকেও বাড়তে সাহায্য করে। মাশরুমের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও ভিটামিন-ডি আছে। শিশুদের দাঁত ও হাড় গঠনে এ উপাদানগুলো অত্যন্ত কার্যকরী। মাশরুমে নিউক্লিক অ্যাসিড ও অ্যান্টি অ্যালার্জেন থাকায় এবং সোডিয়ামের পরিমাণ কম থাকায় কিডনির রোগ ও অ্যালার্জি রোগের প্রতিরোধক। মাশরুমে স্ফিংগলিপিড এবং ভিটামিন-১২ বেশি থাকায় স্নায়ুতন্ত্র ও স্পাইনাল কর্ড সুস্থ রাখে। তাই মাশরুম খেলে হাইপার টেনশন দূর হয় এবং মেরুদণ্ড দৃঢ় থাকে। হেপাটাইটিস বি ও জন্ডিস প্রতিরোধ করে।

অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতা থেকে রেহাই পাওয়া যায়। মাশরুমের খনিজ লবণ দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক। তাই মাশরুম একবার রান্নার পরে দ্বিতীয়বার গরম করে খেলে এই পুষ্টি গুণ নষ্ট হয় এবং তা আমাদের পেটের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর।

তেল

একই তেলে বারবার রান্না করা কোনও খাবার খাওয়া থেকে সাবধান থাকতে হবে। অনেকেই রাস্তার পাশে বা ফুটপাতের খাবার এ কারণেই এড়িয়ে যান। একই তেলে রান্না নানারকম খাবার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। যখন কোনও কিছু ভাজার জন্য তেল বেশি গরম করা হয়, তখন তেলের গঠন পরিবর্তন হয় এবং এতে বিষাক্ত উপাদান তৈরি হয়। এ তেল হৃদযন্ত্রের জন্য খারাপ। রক্তে বাজে কোলস্টেরল তৈরির জন্যও এই তেল দায়ী। তাই বারবার একই তেল ব্যবহার করে রান্না করা খাবার এড়িয়ে যান নিজের স্বাস্থ্যের জন্যই।

শালগম

স্যুপ বা তরকারিতে জনপ্রিয় একটি আইটেম শালগম। শালগমের নাইট্রেট দ্বিতীয়বার গরম করলেই বিষাক্ত নাইট্রাইট উৎপন্ন করে। অনেকেই আছেন যারা খাবার নষ্ট হয়ে যাওয়া বা পচে যাওয়ার ভয়ে খাবার কয়েকবার গরম করে বা ফ্রীজে রাখেন। সেক্ষেত্রে যে সকল খাবার একাধিকবার গরম করা যায় না, সেসব খাবার ঠাণ্ডা স্থানে রাখতে পারেন যেখানে বাতাসের চলাচল ভালো। নতুবা আপনাকেই স্বাস্থ্য নিয়ে হুমকির মুখে পড়তে হতে পারে।

স্যুপ

স্যুপে থাকা মাংস এবং সেলারি শাক কখনওই দ্বিতীয়বার গরম করে খাওয়া উচিত নয়। কারণ এতে তাদের পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়। তাই যারা একবারে গোটা মাসের শাকসবজি, মাছ-মাংসসহ আনুষঙ্গিক খাদ্যপণ্যের বাজার সেরে ফেলেন, এরপর তা ব্যবহার করতে থাকেন, তাঁরা একটু সাবধানেই থাকবেন। কারণ বুঝতেই পারছেন কতটা ক্ষতি করে একবার তৈরি করা খাবার পুনরায় গরম করে খেলে। এমনিতেই রেফ্রিজারেটরের কল্যাণে খাদ্যপণ্য নষ্ট হওয়ার কোনও আশঙ্কা থাকে না। ফলে বাসি খাবারও খাওয়া হয় নিয়মিতই। কিন্তু বাসি খাদ্য গ্রহণসহ পুরনো হয়ে যাওয়ার পর খাবারের আনুষঙ্গিক উপাদানগুলোর ব্যবহার স্বাস্থ্যসম্মত তো নয়ই, একই সঙ্গে হয়ে উঠতে পারে অকালমৃত্যুর কারণ।


সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে, খাবার প্রস্তুতে পুরনো উপাদান ব্যবহারে আয়ুষ্কাল হ্রাস পায়। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা দাবি করেছেন, দেহকোষের দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়ার কারণ হতে পারে পুরনো খাবার। দেহকোষের ক্ষয় বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের যৌবনও ফুরিয়ে আসতে থাকে। ধীরে ধীরে শরীরে ডিএনএ-প্রোটিন সংযোগও ক্ষয় পেতে থাকে। শ্বসনক্রিয়া ও কোষের এনজাইম ফাংশনও ধীর হয়ে আসতে থাকে। এক পর্যায়ে শরীর এতটাই দুর্বল হয়ে পড়ে যে, ফুরিয়ে যায় আয়ু। মানুষ পতিত হয় মৃত্যুমুখে।

 

ব্লাড প্রেশার থেকে বাঁচতে চাইলে

পরামর্শে অভ্রান্ত রায়

খুব অল্প বয়সে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা ধরা পড়েছে। একটা সময় ছিল, এই ঘটনা বেশ তোলপাড় তুলত।

কিন্তু এই সমস্যা আজ আর নতুন নয়। ঘরে ঘরে ১৬/১৭ বছর বয়সে ধরা পড়ছে এই হাই ব্লাড প্রেশার। অনেকেরই আবার দুবেলা ওষুধ খাওয়ার পরেও নিয়ন্ত্রণে থাকছে না প্রেশার। এ ক্ষেত্রে ওষুধের থেকেও বেশি কাজে দেয় লাইফস্টাইল পরিবর্তন। জীবনযাপনে খুব ছোট ছোট বদল এনে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় নিজেকে।


বাড়তি মেদ ঝরিয়ে ফেলুন

ডাক্তারি হিসেব বলে অতিরিক্ত মেদ ঝরিয়ে ফেলতে পারলে নিয়ন্ত্রণে থাকবে আপনার ব্লাড প্রেশার। ২২ পাউন্ড ঝরালে ১ মিলিমিটার/পারদ ব্লাড প্রেশার কমে যায়। একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের কোমরের মাপ যদি ৪০ সেন্টিমিটারের বেশি হয় এবং প্রাপ্তবয়স্ক মহিলার কোমরের মাপ যদি ৩৫ ইঞ্চির বেশি হয়, অবিলম্বে বাড়তি মেদ ঝরিয়ে ফেলতে হবে।


নিয়মিত হালকা শরীরচর্চা করুন

সপ্তাহে ১৫০ মিনিট, অর্থাৎ পাঁচদিন ৩০ মিনিট করে হালকা থেকে ভারী শরীরচর্চা করুন। ব্রিস্ক ওয়াক, মানে ঘাম ঝরিয়ে হাঁটলে, সাইক্লিং করলে অথবা সাঁতার কাটলে শরীর চনমনে থাকে। ব্লাড প্রেশারও নিয়ন্ত্রণে থাকে।


স্বাস্থ্যকর ডায়েটে থাকুন

বাজার থেকে যখন জিনিস কিনবেন, প্যাকেটের গায়ে থাকা উপাদান কী অনুপাতে রয়েছে দেখে নিন। অবশ্যই পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার, শাক সবজি, ফল, জল প্রচুর পরিমাণে খান। কার্বোহাইড্রেট কমিয়ে প্রোটিন খাওয়া বাড়ান।ডায়েট থেকে বাদ দিন সোডিয়াম খাবার পাতে নুন খাবেন না। রান্নায় যথাসম্ভব নুন কমিয়ে দিন। প্রসেসড খাওয়ার বর্জন করুন। ফ্রেশ রান্না করা খাবার খান।


ধূমপান ছাড়ুন, মদ্যপান কমান

ধূমপান পুরোপুরি ছেড়ে দিতে হবে। তাহলে স্বাভাবিক নিয়মেই হার্টের অবস্থার উন্নতি হবে। তার সঙ্গে কমিয়ে ফেলতে হবে অ্যালকোহল জাতীয় সমস্ত পানীয়র অভ্যেস।


একজন ডাক্তার চিকিৎসার জন্য বেশ কিছু কার্যকর ওষুধের পরামর্শ দিতে পারবেন তবে সেগুলির বেশিরভাগের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও রয়েছে। রক্তচাপ কমাতে অনেক প্রমাণিত প্রাকৃতিক ও নন-ফার্মাকোলজিকাল পদ্ধতি রয়েছে, তবে কোনটা কাজ করে আর কোনটা করেনা, সেটা নিয়ে অনেক জল্পনা-কল্পনা রয়েছে। এখানে আছে হাইপারটেনশন এর বিরুদ্ধে প্রাকৃতিক প্রতিকারের একটি তালিকা যা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত। লবণ কমানো আপনার খাদ্যে সোডিয়াম (লবণ) এর পরিমাণ হ্রাস করাই হচ্ছে প্রথম কাজ। বেশিরভাগ মানুষ প্রতিদিন ৯ থেকে ১২ গ্রাম লবণ ব্যবহার করেন। যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশকৃত ৫ গ্রামের থেকে বেশি। অতিরিক্ত লবণের পরিমান অর্ধেক করুন। কম সোডিয়ামযুক্ত লবণ ব্যবহার করুন।

ডার্ক চকোলেট

ডার্ক চকোলেটে (৭০% বা তার থেকে বেশি কোকো) রয়েছে উপকারী যৌগ, যা পলিফেনল এবং ফ্ল্যাভোনয়েড নামে পরিচিত। এই যৌগগুলি শুধুমাত্র রক্তচাপই কমায় না বরং নানারকম হৃদরোগ সম্পর্কিত অন্যান্য পরিমিতি সমূহ আরও উন্নত করতে সহায়তা করে।


বেরি

আপনার নিয়মিত স্বাভাবিক ডায়েটের পাশাপাশি এক পোর্শন বেরি, পলিফেনলসের আকারে অতিরিক্ত সুবিধা যোগ করে, যা আপনার কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্য উন্নত করতে সহায়তা করে। চিনিযুক্ত কোমল পানীয় বাদ দিন অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যে সোডা বা চিনিযুক্ত কোমলপানীয় উচ্চ মাত্রায় চিনির কারণে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়।


প্রোটিন:


কফি কম খান

যারা নিয়মিত কফি খান, তাঁরা হয়তো তেমন বুঝতে পারবেন না বদলটা। কিন্তু যাদের সেই অভ্যাস নেই, তাঁরা হঠাৎ এই অভ্যাসটা ধরবেন না। আপনি নিজেও বুঝতে পারবেন, কফি খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে একবার ব্লাড প্রেশার মাপুন। তারপর কফি খাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে মাপুন। নিজের চোখেই দেখতে পাবেন ফারাকটা।


স্ট্রেস লেভল কমান

মানসিক চাপ থেকে ব্লাড প্রেশার বাড়ার ঘটনা আকছার ঘটছে। এবার চাপ কমানো আপনার হাতেই অনেকটা। মানসিক চাপ . উদ্বেগ আসতে পারে, এ ধরণের পরিস্থিতি এড়িয়ে চলুন। সাংঘাতিক উচ্চাশা থাকলে চাপ হবেই। আপনি যা কিছু নিজে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন, তা নিয়েই কাজ করুন।


ঘরেই রক্তচাপ মাপুন

এখন রক্তচাপ মাপার ডিজিটাল যন্ত্র সবার ঘরে ঘরেই থাকে। নিয়মিত তাতে আপনার রক্তচাপ মাপুন। একটু কম বেশি হলে ক্ষতি নেই। তবে হঠাৎ অনেকটা ফ্লাকচুয়েট করা শুরু করলে অবশ্যই চিকিৎকের পরামর্শ নিন।


রক্তচাপ কমিয়ে আনার প্রাকৃতিক উপায়

উচ্চ রক্তচাপ (হাইপারটেনশন) ভারতে ক্রমবর্ধমান হারে ঘরে ঘরে। অনুমান করা হচ্ছে যে ভারতে ১০ থেকে ২৫ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্কদের উচ্চ রক্তচাপ বা প্রিহাইপারটেনশন আছে। যদিও প্রোটিন (৫৬ গ্রাম) আপনার ডায়েটে যোগ করলে আপনার রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে; উপরন্তু, এটি কার্ডিওভাসকুলার এবং বিপাকীয় স্বাস্থ্যের অন্যান্য পরামিতি সমূহ উন্নত করতে পারে।


রসুন

রসুন আপনার রক্তচাপ উন্নত করার জন্য একটি কার্যকর এবং নিরাপদ পদ্ধতি। আপনার খাবারে রসুন যোগ করলে তা স্বাস্থ্যকর এবং সুস্বাদু উভয় হবে।

যোগ ব্যায়াম এবং ধ্যান

চাপ (স্ট্রেস) খুব দৃঢ়ভাবে হাইপারটেনশন এর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। তাই, যেকোনও কিছু যা চাপকে হ্রাস করতে পারে, তা অবশ্যই রক্তচাপ হ্রাসেও অনিবার্য সুবিধা প্রদান করবে। আপনার দৈনন্দিন জীবনে যোগব্যায়াম, ধ্যান এবং প্রাণায়াম এর মত অনুশীলন যুক্ত করুন।


টু কফি অর নট টু কফি:

এটা সত্য যে কফি (বা চা এবং নরম পানীয় সহ অন্য কোনওরূপের ক্যাফিন) রক্তচাপ বৃদ্ধি করে, তবে সেটি খুব সামান্য বৃদ্ধি হয়। এছাড়াও, বিভিন্ন ব্যক্তি কফির প্রতি ভিন্নভাবে প্রতিক্রিয়া করেন এবং কিছু গবেষণা রক্তচাপের উপর ক্যাফিনের কোন প্রভাব খুঁজে পায়নি। সংক্ষেপে, বর্তমানে, ক্যাফিন এবং উচ্চ রক্তচাপের মধ্যে কোনও শক্তিশালী সম্পর্ক নেই।


প্রেসার লো! হাতের কাছেই রয়েছে মুক্তি পাওয়ার সহজ উপায়


উচ্চ রক্তচাপ স্বাস্থ্যের জন্য কী পরিমাণে ভয়ংকর সে সম্পর্কে সবারই ধারণা রয়েছে কিন্তু নিম্ন রক্তচাপও কখনও কখনও ভয়ংকর প্রমানিত হতে পারে। নিম্ন রক্তচাপকে হাইপারটেশন বলা হয়। যদি ব্লাড প্রেশার ৯০ বা ৯০ এর নিচে হয় তবে নিম্ন রক্তচাপ আছে ধারণা করা হয়। ঘরোয়া কিছু উপায় আছে যার মাধ্যমে নিম্ন রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।


নুন জল নুনে সোডিয়াম আছে যা রক্তচাপকে বাড়িয়ে দেয়। তবে অতিরিক্ত নুন গ্রহণ করা উচিত নয়। এক গ্লাস জলে আর্ধেক চামচ নুন মিশিয়ে নিন। প্রতিদিন ২ গ্লাস নুন জল খান। দেখবেন রক্তচাপ বৃদ্ধি পেয়েছে।

হাই ব্লাড প্রেশার বা উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণসমূহ


বর্তমানে এমন কোনও একটি বাড়ি পাওয়া যাবে না যেখানে কোনও একজন হাইপারটেনশনের রোগী নেই। প্রেশার হুটহাট বেড়ে যেতে পারে। সবার সিম্পটম এক না তবুও কমন কিছু সিম্পটম হলঃ


উচ্চ রক্তচাপের একেবারে সুনির্দিষ্ট কোনও লক্ষণ সেভাবে প্রকাশ পায় না। তবে সাধারণ কিছু লক্ষণের মধ্যে রয়েছে:


১। প্রচণ্ড মাথা ব্যথা করা, মাথা গরম হয়ে যাওয়া এবং মাথা ঘোরানো


২। ঘাড় ব্যথা করা


৩। বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া


৪। অল্পতেই রেগে যাওয়া বা অস্থির হয়ে শরীর কাঁপতে থাকা


৫। রাতে ভালো ঘুম না হওয়া


৬। মাঝে মাঝে কানে শব্দ হওয়া


৭। অনেক সময় জ্ঞান হারিয়ে ফেলা


এসব লক্ষণ দেখা দিলে নিয়মিত রক্তচাপ মাপতে হবে। এবং ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধ খেতে হবে।


উচ্চ রক্তচাপের কারণ


সাধারণত মানুষের ৪০ বছরের পর থেকে উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে থাকে


১। অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা


২। পরিবারে কারও উচ্চ রক্তচাপ থাকলে


৩। নিয়মিত ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রম না করলে


৪। প্রতিদিন ছয় গ্রাম অথবা এক চা চামচের বেশি লবণ খেলে


৫। ধূমপান বা মদ্যপান বা অতিরিক্ত ক্যাফেইন জাতীয় খাদ্য/পানীয় খেলে


৬। দীর্ঘদিন ধরে ঘুমের সমস্যা হলে


৭। শারীরিক ও মানসিক চাপ থাকলে


উচ্চ রক্তচাপের নিয়ন্ত্রণ


উচ্চ রক্তচাপ বা হাই ব্লাডপ্রেশারকে বলা হয় 'নীরব ঘাতক'। কেননা, অনেকের ক্ষেত্রে এই রোগ খুব সহজে ধরা যায় না। আবার ধরা পড়ার পর এর সঠিক চিকিৎসা না হলে বা প্রেশার নিয়ন্ত্রণে না থাকলে তা অনেক রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।


উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের সবথেকে ভালো উপায় হলো জীবনযাত্রা বা লাইফস্টাইল পরিবর্তন করা। নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ বা ওষুধ গ্রহণই এর একমাত্র চিকিৎসা নয়, ওষুধ গ্রহণের পাশাপাশি নিচের বিষয়গুলো অনেক গুরুত্বের সঙ্গে বিচার করা হয়। যেমন


অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণ করে গ্রহণযোগ্য ওজন বজায় রাখা।


* খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করা।


* নিয়মিত ব্যায়াম করা।


* রাতে সঠিকভাবে ঘুমানো।


অতিরিক্ত মানসিক দুশ্চিন্তা এড়িয়ে চলা।


ধূমপান থেকে বিরত থাকা।

উচ্চ রক্তচাপের রোগীর ডায়েট

ওপরের নিয়মগুলোর মধ্যে ডায়েটের গুরুত্ব অনেক বেশি। সঠিক ডায়েট শুধু রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণেই রাখে না, বরং রক্তচাপের মাধ্যমে তৈরি সমস্যাগুলো প্রতিরোধে সাহায্য করে থাকে। ক্যালরি নিয়ন্ত্রণ, ওজন নিয়ন্ত্রণ ও সঠিক ওজন বজায় রাখার লক্ষ্যে উচ্চ রক্তচাপের রোগীকে খাদ্যের ক্যালরি যইত্যাদি। অবশ্যই কম গ্রহণ করতে হবে। চিনি, অতিরিক্ত ভাত, আলু, মিষ্টি-এই জাতীয় শর্করাযুক্ত খাবারও কম খেতে হবে। ওমেগা-৩ ফ্যাটি আসিডসমৃদ্ধ ফ্যাটজাতীয় খাবার ব্লাডপ্রেশার কমাতে সাহায্য করে, যেমন:


জলপাইয়ের তেল, ফুলকপি, বাদাম, মাছ ইত্যাদি। সোডিয়াম নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপ খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। লবণ হল সোডিয়ামের খুব ভালো উৎস। প্রতিদিন রান্নায় চার থেকে পাঁচ গ্রাম (১ চা চামচ ৫ গ্রাম) পর্যন্ত লবণ ব্যবহার করা ভালো। খাবারের সময় আলাদা লবণ পরিহার করতে হয়। লবণাক্ত খাবার, যেমন : চিপস, পাপড়, চানাচুর, আচার ইত্যাদি অবশ্যই এড়িয়ে চলতে হবে।


পটাশিয়ামযুক্ত খাবার উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য অনেক জরুরি। পটাশিয়াম রক্তের সোডিয়ামের মাত্রা যথাযথভাবে বাড়িয়ে রাখতে সহায়তা করে। ডাবের জল, কলা, টমেটো,গাঢ় সবুজ শসা, সবজি, স্যালাড পটাশিয়ামের ভালো উৎস, যা উচ্চ রক্তচাপ রোগীর খাদ্যতালিকায় থাকলে তা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। প্রোটিনজাতীয় খাবার উচ্চ রক্তচাপের রোগীকে একটু হিসাব করে খেতে হয়। মুরগির মাংস, মাছ, ডিমের সাদা অংশ, লো ফ্যাট দুধ, টক দই, ডাল ইত্যাদি প্রোটিনের ভালো উৎস। এ রোগ নিয়ন্ত্রণে লবণের সঙ্গে পান-জর্দা-তামাক পরিহার করতে হয়।

গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্ত-চাপ ও প্রাকৃতিক প্রতিকার গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্ত-চাপ হওয়া খুবই সাধারণ একটি ব্যাপার।

কিন্তু কীভাবে একে নিয়ন্ত্রণ করা যায় তা নির্ধারন করা মহিলাদের জন্য একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। এসময় কোনও ওষুধ খাওয়া যায় না। তাই দরকার যেকোনও ধরনের প্রাকৃতিক প্রতিকারের। তবে প্রয়োগের আগে সে বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্গ গবেষণা করা এবং বিশেষজ্ঞের পরামর্শ প্রয়োজন। গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্ত চাপ পরিচালনা করতে এখানে আপনার জন্য ১০টি প্রতিকারের সুপারিশ করা হল।


১। ব্যায়াম

চিকিৎসকের পরামর্শ মতো আপনার রক্তচাপ এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করাকে একটি প্রয়োজনীয়তা হিসাবে বিবেচনা করা হয়।


২। সোডিয়াম গ্রহণে নিয়ন্ত্রণ আনুন

গর্ভবতী অবস্থায় আপনার হরমোনগুলি অত্যাধিক মাত্রায় ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। এটি আপনার অনাক্রম্যতায় আঘাত করে। তাছাড়াও এটি আপনার দেহের প্রাকৃতিক কার্যকারিতাকে হ্রাস করে। এর অর্থ হল নুন বা নোনতা জাতীয় খাবারগুলি প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং হজম করা আরও বেশি কঠিন হয়ে ওঠে এবং যদি নুনটি সঠিকভাবে হজম না হয় বা আপনার খাদ্যে অতিরিক্ত পরিমাণে থেকে থাকে, তবে এটি অত্যাধিক রক্তচাপের প্রবণতা সৃষ্টি করতে পারে। লবণের মাত্রা কমানোর ফলে তা আবার গর্ভাবস্থায় আপনার শরীরে শক্তির মাত্রা বাড়িয়ে তোলে এবং অনাক্রম্যতা বৃদ্ধিকারী হিসেবে কাজ করে।


৩। কলা খান

গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন একটি অথবা দুটি করে কলা খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ উপকারী। এটি হজম শক্তি বাড়ায় এটি আবার পটাসিয়ামেও সমৃদ্ধ। এই গুণগুলি কলাকে অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর করে তুলেছে উচ্চ রক্ত-চাপ আছে এমন যেকোনও লোকের জন্য।


৪। ম্যাগনেসিয়াম

২০১১ সালে ইন্ডিয়ান মেডিকেল আসোসিয়েশনের জার্নালের এক গবেষণা থেকে জানা যায় যে, আত্মাধিক রক্তচাপ সম্পর্কিত সমস্যাগুলি পরিচালনা করতে ম্যাগনেসিয়ান সাহায্য করে থাকে। বেশিরভাগ চিকিৎসক সুপারিশ করেন যে গর্ভবর্তী মহিলাদের ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার যেমন টফু, অ্যাভোকাডো, কলা, আমন্ত বাদাম এবং সয়া দুধ খাওয়া উচিত কারণ ম্যাগনেসিয়াম কেবল। রক্তচাপের একটি স্বাস্থ্যকর মাত্রা বজায় রাখতে সহায়তা করে না, এটি আবার গর্ভাবস্থায় অকাল সংকোচনকে প্রতিরোধের মাধ্যমে জরায়ুর সম্পূর্ণতা বজায় রাখার ক্ষেত্রেও একটি বড় ভূমিকা পালন করে।


৫। চাপ-মুক্ত

আপনি গর্ভবতী হলে, উদ্বেগ, অবসাদ এবং মানসিক চাপ সৃষ্টি হওয়া সাধারণ ব্যাপার। এগুলির কারণেও আপনার উচ্চ রক্ত-চাপ হয়ে থাকতে পারে। তাই তাদের সারা দিনে কমপক্ষে ৩ বার ৩০ মিনিট করে গান শোনার সুপারিশ করা হয়।


৬। অ্যালকোহল বা মাদক দ্রব্য গ্রহণের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা আনুন

গর্ভাবস্থায় অ্যালকোহলের জটিলতা এত বেশি যে ডাক্তাররা আপনাকে আপনার গর্ভাবস্থার সম্পূর্ণ সময়ের জন্য যেকোনও অ্যালকোহলযুক্ত পানীয় বর্জন করার পরামর্শ দেন। এর পিছনে অনেকগুলি কারণগুলির মধ্যে একটি হল উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টি হওয়া। অ্যালকোহল গ্রহণ বিভিন্ন কারণে যে কোনও গর্ভাবস্থাকে জটিল করে তুলতে পারে।


৭। ধূমপান করবেন না

অনেকটা অ্যালকোহলের মতই, ধূমপান করার খারাপ দিকগুলির প্রভাব আপনার দেহের উপর পড়ে নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ার মাধ্যমে। এমনকি যখন আপনি গর্ভবতী নন তখনও এর ফলে ক্যান্সার, ওজন বৃদ্ধি, উদ্বেগ, অবসাদ এবং উচ্চ রক্ত-চাপ পর্যন্ত হতে পারে। যখন আপনি গর্ভবতী থাকেন এই ঝুঁকিগুলি আরও চতুর্গুণ বেড়ে যায়। সুতরাং আপনি গর্ভবতী হলে ধূমপান করা থেকে সম্পূর্ণরূপে অব্যহতি নেওয়া হল সবচেয়ে সেরা বিকল্প।


৮। ক্যাফিন পরিহার করুন

উচ্চ রক্তচাপের অন্যতম প্রধান কারণ হল ক্যাফিন গ্রহণ। আমরা আপনার গর্ভাবস্থায় আপনাকে একটি স্বাস্থ্যকর রক্ত-চাপ বা ব্লাড প্রেসার (BP)-এর মাত্রা বজায় রাখতে ক্যাফিন গ্রহণে সীমাবদ্ধতা আনতে বা সেটিকে পুরোপুরি ত্যাগ করারই পরামর্শ দিই।


৯। মশলাদার খাবার বা জাঙ্ক ফুড এড়িয়ে চলুন

জাঙ্ক ফুড বা মশলাদার খাবারগুলি সাধারণত প্রিজারভেটিভ দ্বারা প্যাকেট করা হয় এবং এটি অত্যন্ত অ-স্বাস্থ্যকর হিসাবে পরিচিত। যদিও এটি আপনার খাদ্যটির প্রতি তীব্র বাসনাকে তৃপ্ত করতে পারে, এটি কিন্তু পুষ্টির এক দুর্দান্ত উৎস নয়। সুতরাং, আপনার গর্ভাবস্থায় স্বাস্থ্যকর থাকতে এবং আপনার রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে জাঙ্ক ফুডগুলি এড়িয়ে চলুন।

 


コメント


bottom of page